চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে বায়েজিদে তাণ্ডব

৫০-৬০ জন সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্রসহ হামলায় অংশ নেয়

১৫৪

চাঁদাবাজির ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে বায়েজিদে নগরীর শীর্ষ সন্ত্রাসী শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ হোসেন খানের ভাই ঠিকাদার ওসমান গনি সেগুনের বসতবাড়িতে ব্যাপক হামলা-ভাংচুর, গুলিবর্ষণ, লুটপাট ও পেট্রোল বোমার আগুন দিয়ে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে এখনও পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকেই আটক করা যায়নি। উদ্ধার হয়নি হামলায় ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্রও। এতে ওই এলাকার জনমনে আতঙ্কের ছাপ বিরাজ করছে।

৭ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) দুপুর আড়াইটায় বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী এলাকায় ঠিকাদার ওসমান গনি সেগুনের বাড়িতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ঠিকাদার ওসমান গনি সেগুন বাদি হয়ে ১৫ জনকে এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামী করে বায়েজিদ থানায় হামলা, ভাংচুর, আগুন সন্ত্রাস ও লুটপাটের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

বায়েজিদ বোস্তামী থানা ও অন্যান্য সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুর দুইটা ৪০ মিনিটে বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী এলাকায় ঠিকাদার ওসমান গনি সেগুনের বসতবাড়িতে ২০-২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল হামলা করে। এসময় তারা ওই বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর করে তাণ্ডব চালায়। আগুন লাগিয়ে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। এতে ঘরের সব আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। টাকা, স্বর্ণালংকারসহ দামি সব জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়।

তবে ভিন্ন তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা জানায়, মঙ্গলবার দুপুরের পর মোটরসাইকেলে ৫০-৬০ জন সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্রসহ সেগুনের বসতবাড়িতে হামলায় অংশ নেয়। এসময় তারা ব্যাপক ভাংচুরের পাশাপাশি দফায় দফায় গুলিবর্ষণও করে। কয়েকটি পেট্রোল বোমা মেরে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে ধাউধাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। মুহুর্তেই পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা আরও জানায়, নগরীর শীর্ষ সন্ত্রাসী শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ হোসেন খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হারুন উর রশীদ ও আলী আকবর ওরফে ঢাকাইয়া আকবর তার দলবল নিয়ে এ হামলা চালিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে নিজেদের মধ্যে চাঁদাবাজির ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে সাজ্জাদের ভাই সেগুনের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়েছে তার নিজের অনুসারীরা।

হামলায় জড়িত হারুন উর রশীদ ও আলী আকবর ওরফে ঢাকাইয়া আকবর দুজনই পুলিশের তালিকায় দাগি অপরাধী ও বহু মামলার আসামী। দীর্ঘ দিন ধরে সাজ্জাদের হয়ে তারা নগরীর বিভিন্ন নির্মাণাধীন ভবনে, শিল্প কারখানা ও গার্মেন্টসের জমি ক্রয়ে চাঁদাবাজি ও নানা অপরাধ করে আসছে। শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদের বিরুদ্ধেও রয়েছে অসংখ্য মামলা।

এদিকে এ ঘটনায় ১৫ জনকে এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত আরও অনেককে আসামী করে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও আগুন লাগিয়ে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে বায়েজিদ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন সাজ্জাদের ভাই ঠিকাদার ওসমান গনি সেগুন।

হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। উদ্ধার হয়নি হামলার ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্রও। এতে চালিতাতলী এলাকার জনসাধারণের মাঝে এক ধরণের আতঙ্কের ছাপ বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি তদন্ত মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ঠিকাদার ওসমান গনি সেগুন বাদী হয়ে চাঁদাবাজি, হামলা, ভাংচুর, টাকা, স্বর্ণলংকারসহ জিনিসপত্র লুটপাট, আগুন দিয়ে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে একটি মামলা করেছেন। এতে ১৫ জনকে এজাহার নামীয় আসামী করা হয়েছে। আমরা এখনও কাউকে আটক করতে পারিনি। তবে অভিযান অব্যাহত আছে। প্রাথমিক তদন্তে হামলায় গুলিবর্ষণ ও পেট্রোল বোমা মারার আলামত আমরা পাইনি। আমাদের অধিকতর তদন্ত চলমান রয়েছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.