পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যায় দ্রুত অ্যাকশন কমিটি গঠনের আহ্বান শাহজাহান চৌধুরীর
বৈষম্যবিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐক্য পরিষদ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় জামায়াতের চট্টগ্রাম মহানগর আমির সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা দীর্ঘদিনের। এই সমস্যা সমাধানের জন্য কার্যকর অবদান রেখেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তাঁর ভূমিকাকে অবহেলা করার কারণে আজকে পার্বত্য চট্টগ্রামে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই সমস্যা ঘাড়ের উপর রেখে বাংলাদেশকে অগ্রসর করা কোনোদিনও সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ৫৩ বছরে সবচেয়ে বেশি কার্যকর অবদান যিনি রেখেছিলেন তিনি হচ্ছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনি যেসব কার্যকর ভূমিকা আর উদ্যোগ নিয়েছিলেন, সেগুলোকে অবহেলা করার কারণে আজকে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাহেব এবং উপদেষ্টা মন্ডলীকে আহ্বান করব, গত তিনদিন আগে যে ঘটনা ঘটেছে, তা সমাধানের জন্য অতিসত্বর একটি বিশেষ অ্যাকশন কমিটি গঠন করুন।
শাহজাহান চৌধুরী অরো বলেন, পার্বত্য এলাকায় যারা উপজাতি আছে তাদের দাবি দাওয়া আছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশি মুসলমান-হিন্দু ও পাহাড়ি যারা রয়েছেন তাদের ব্যাপারে যে অবজ্ঞা এবং যেভাবে তাদের নাগরিক হিসেবে সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে এটা মোটেও ঠিক হচ্ছে না। আগের সরকার যা করেছে তা অন্যায় করেছে। সেজন্য এখন উপদেষ্টা পরিষদের কাছে আহ্বান করব অতিসত্বর এই সমস্যার সমাধান দরকার।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ বলেন, দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হওয়ার পর শান্তিচুক্তিতে যেসব বৈষম্য রয়েছে সেগুলো খতিয়ে দেখে সংশোধন করে আমাদের যেমন বাঙালিদের স্বার্থও দেখতে হবে, তেমনি পাহাড়িরাও যেহেতু আমাদের এইদেশের অদিবাসী তাঁদের স্বার্থও দেখতে হবে। দুটোকে ভারসাম্য করে আমি মনে করি একটা সুন্দর সমাধান করা উচিত। কেননা এটা নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ সভাপতিত্বে বৈষম্যবিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী তৌহিদুল ইসলাম আজাদের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী চৌধুরী, সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য অধ্যাপক আহসান উল্লাহ ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামী খাগড়াছড়ি জেলা আমীর অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল মোমেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলা আমীর মাওলানা আব্দুস সালাম আজাদ, মহানগরী জামায়াতের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এয়াকুব আলী, বাংলাদেশ লয়ার্স কাউন্সিল চট্টগ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুল আলম, খাগড়াছড়ি জেলার স্থানীয় সরকার পরিষদের সাবেক সদস্য আবু বকর ছিদ্দিক, বান্দরবান পার্বত্য আইনজীবী ফোরামের অ্যাডভোকেট আবু তালেব, বান্দরবান জেলার জামায়াত নেতা মুহাম্মদ রফিক বসরী প্রমুখ।
গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র এবং বৈষম্য দূরীকরণে’ বৈষম্যবিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে ১০টি এবং পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে ৮টি দাবি দেওয়া হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে চলমান সহিংসতাসহ সকল হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিও জানান তারা।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.