জিপিওতে ২৯ কোটি টাকা আত্মসাত: ৩ জন জেল হাজতে
গ্রাহকের প্রায় ২৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রাম জেনারেল পোস্ট অফিসের (জিপিও) তিন কর্মচারীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২২ আগস্ট) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ বেগম জেবুননেছার আদালত এ আদেশ দেন। আসামিরা হলেন- মো. জয়নাল আবেদীন, মো. কবির আহমেদ (৪৫) ও মো. হাসান (৪৭)। এরা সবাই পোস্টাল অপারেটর। এই মামলার অপর দুই আসামি চট্টগ্রাম জিপিওর তৎকালীন সঞ্চয় শাখার সহকারী পোস্ট মাস্টার নূর মোহাম্মদ (৫৪) ও পোস্টাল অপারেটর সরওয়ার আলম খান (৫৩) উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু বিষয়টি নিশ্চিত করেন । তিনি জানান, তিন আসামি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২০ সালে ২১ অক্টোবর চট্টগ্রাম জিপিওর দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে দুদকের সহকারী পরিচালক শহীদুল ইসলাম মোড়ল। ২০২০ সালের ১ মার্চ থেকে ২৬ আগস্ট পর্যন্ত জিপিওতে সরওয়ার কর্মরত থাকা অবস্থায় ৯টি সঞ্চয়ী ও একটি মেয়াদি হিসাব থেকে মোট ২৩ কোটি ৬৬ লাখ ৭৭ হাজার ৩০০ টাকা অবৈধভাবে উত্তোলন করা হয়। আসামি মো. হাসান ৪ কোটি ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা, জয়নাল ১ কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার এবং কবির আহমেদ ১ কোটি ১৫ লাখ আত্মসাৎ করেন বলে মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
২০২০ সালের ২৬ আগস্ট জিপিওর ঊর্ধ্বতন পোস্ট মাস্টার ড. মো. নিজাম উদ্দিন সঞ্চয় শাখা আকস্মিক পরিদর্শন করে তিন আমানতকারীর হিসাবের লেজারে ৪৫ লাখ টাকা জমা দেখালেও ওই টাকা সরকারি খাতে না দিয়ে উত্তোলনের প্রমাণ পান। এ ঘটনায় ওই বছরের ২১ অক্টোবর নূর মোহাম্মদ ও সরওয়ার আলম খানের নামে মামলা করে দুদক।
তদন্তে উঠে আসে জিপিওর পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রাহকদের অর্থ সঠিক হিসাবের পরিবর্তে ভুয়া নাম-ঠিকানা ও ছবি দিয়ে করা হিসাবে জমার পর উত্তোলন করেছেন। ৯টি সঞ্চয়ী ও একটি মেয়াদি হিসাবের বিপরীতে অভিযুক্তরা যোগসাজশের মাধ্যমে মোট ২৯ কোটি ৩ লাখ ৯২ হাজার ৩০০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তদন্ত শেষে গত ৭ আগস্ট তাদের অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়
আদালতে ৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। মামলাটির পরবর্তী বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.