লোহাগাড়ার মুখতারই পবিত্র কাবা’র গিলাফের প্রধান ক্যালিগ্রাফার, পেলেন সৌদি নাগরিকত্ব
বিভিন্ন পেশার দক্ষ বিদেশি নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল সৌদি আরব। এরপর প্রথম দিনেই নাগরিকত্ব লাভ করেছেন বাংলাদেশের মুখতার আলম। তিনি প্রধান ক্যালিগ্রাফার হিসেবে মক্কার পবিত্র কাবা ঘরের গিলাফ (কিসওয়াহ) প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। সৌদি গেজেট সূত্রে এ খবর জানা যায়।
সৌদি বাদশার এক রাজকীয় নির্দেশনায় বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব দেয়ার কথা জানানো হয়। এদের মধ্যে প্রথম দিন ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, ইতিহাসবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও চিকিৎসক, বিনিয়োগকারক, প্রযুক্তিবিদ, ক্রীড়াবিদসহ পাঁচ বিদেশি নাগরিক আছেন। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ঘোষিত ‘ভিশন-২০৩০’-এর অংশ হিসেবে বিভিন্ন পেশার দক্ষ বিদেশিদের নাগরিকত্ব দেয়ার এ রাজকীয় নির্দেশনা দেয়া হয়।
সৌদি সংবাদ মাধ্যম আশ শারাক আল আওসাতের বরাত দিয়ে সৌদি গেজেট জানায়, নাগরিকত্ব পাওয়া বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন, পবিত্র কাবার গিলাফের (কিসওয়া) প্রধান ক্যালিগ্রাফার মুখতার আলিম, ইতিহাসবিদ ড. আমিন সিদো, ড. আবদুল করিম আল সামমাক, প্রখ্যাত গবেষক ড. মুহাম্মদ আল বাকাই ও প্রখ্যাত নাট্য শিল্পী সামান আল আনি।
মুখতার বর্তমানে মক্কার কিসওয়া কারখানায় পবিত্র কাবার কিসওয়ার প্রধান ক্যালিগ্রাফার হিসেবে কাজ করছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ও ফোরামে তার প্রধান ক্যালিগ্রাফিগুলো প্রদর্শিত হয়েছে। ক্যালিগ্রাফি দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ পাঠদান করেন। মক্কার দ্য ইনস্টিটিউট অব হলি মসকো তথা পবিত্র মসজিদুল হারাম পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে ক্যালিগ্রাফি বিষয়ক তার পাঠ শোখানো হচ্ছে।
মুখতার আলম মক্কার বিখ্যাত উম্মুল কোরা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে বর্তমানে পিএইচডি গবেষণারত। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপ্লোমা, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের সার্টিফিকেটের ক্যালিগ্রাফার হিসেবেও কাজ করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সংস্থা থেকে অসংখ্য পুরস্কার ও প্রশংসার সনদ পেয়েছেন তিনি।
জানা যায়, মুখতার আলম চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের রশীদের ঘোনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মুফিজুর রহমান বিন ইসমাঈল শিকদার। মায়ের নাম শিরিন বেগম। তার বাবা কর্মজীবনের শুরুতে কিছুদিন ঐতিহ্যবাহী চুনতি হাকীমিয়া আলিয়া মাদরাসার শিক্ষক ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি দীর্ঘ সময় সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ফার্মাসিস্ট হিসেবে বিভিন্ন হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন। মূলত বাবার কর্মসূত্রে পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘ সময় সৌদিতে কাটিয়েছেন। বর্তমানে মুখতার তার মা, স্ত্রী ও চার মেয়েকে নিয়ে মক্কায় আছেন। মুখতারের চার ভাই ও এক বোন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.