হাতিয়ার জাগলার চরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গোলাগুলি: নিহত ৫, আহত ৮–১০

ছবি সংগৃহীত :

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জাগলার চরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও আট থেকে দশজন।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী জাগলারচর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহত পাঁচজনের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি হলেন আলাউদ্দিন (৪০)। তিনি সুখচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চর আমান উল্যাহ গ্রামের ছেরাং বাড়ির মহিউদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, জাগলার চরের জমি সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত কাউকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। এই সুযোগে গত ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী চরের একাধিক জমি বিক্রি করে। পরবর্তীতে সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী ওই জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে।

একপর্যায়ে আলাউদ্দিন বাহিনী আরও বেশি দামে চরের কিছু জমি বিক্রি করে বলে অভিযোগ ওঠে। এতে করে দুই গ্রুপ আলাদাভাবে চরের জমি বিক্রির চেষ্টা চালাতে থাকে, যা বিরোধকে আরও তীব্র করে তোলে।

অভিযোগ রয়েছে, চর দখলের সঙ্গে যুক্ত ডাকাত আলাউদ্দিন সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) নেতা নিজাম মেম্বার এবং বিএনপি নেতা নবীর ঘনিষ্ঠ। তারা কোপা সামছু বাহিনীকে চর থেকে বিতাড়িত করে জমি দখলে নিতে আলাউদ্দিন বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করেন।

এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার বিরোধ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ মঙ্গলবার সকালে চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে কোপা সামছু ও আলাউদ্দিন পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে গিয়ে বন্দুকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে আলাউদ্দিনসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ছাড়া ঘটনাস্থলেই আরও চারজন নিহত হন। স্থানীয়দের ধারণা, দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম জানান, নিহত পাঁচজনের মধ্যে চারটি মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং একটি মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.