৯ সেকেন্ডেই ধুলায় মিশে গেল ভারতের টুইন টাওয়ার
মাত্র ৯ সেকেন্ডের নিয়ন্ত্রিত এক বড় বিস্ফোরণে ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের নয়ডাতে দেশটির টুইন টাওয়ার-খ্যাত জোড়া ‘সুপারটেক’ ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রোববার স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে বিশাল বিস্ফোরণের মাধ্যমে ধুলার মেঘ তুলে মুহূর্তের মধ্যে ভেঙে পড়ে ভবন দুটি।
গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ের ধারে জোড়া এই বহুতল ভবনের বিভিন্ন টাওয়ারে ভর্তি করা হয়েছিল ৩ হাজার ৭০০ কেজি বিস্ফোরক। তা দিয়েই উড়িয়ে দেওয়া হল অ্যাপেক্স এবং সিয়েন— সুপারটেকের দুই ভবন।
জোড়া বহুতল ভবন ভাঙার মুহূর্তের ভিডিওতে দেখা যায়, মাত্র ৯ সেকেন্ডের মধ্যেই অ্যাপেক্সের ৩২ তলার সঙ্গে মাটিতে মিলিয়ে গেল সিয়েনের ২৯ তলা ভবন। এই দুই ভবনে মোট এক হাজার ফ্ল্যাট ছিল।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ভবন দুটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হলেও এখন কর্তৃপক্ষের অন্যতম চ্যালেঞ্জ ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করা। এই অভিযানের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, ভবন দুটি ভেঙে ফেলায় সেখানে ৫০ হাজার টন আবর্জনা তৈরি হবে। আর এসব আবর্জনা পরিষ্কারে সময় লাগতে পারে অন্তত তিন মাস।
বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা আগে নয়ডার ওই এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। বিস্ফোরণে আশপাশের ভবনের যেন কোনও ধরনের ক্ষয়ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সকাল থেকেই ওই এলাকার সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া যেকোন জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও অন্যান্য সংস্থার সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়।
এনডিটিভি বলছে, টাওয়ার দুটিতে ৩ হাজার ৭০০ কেজি বিস্ফোরক রাখা হয়েছিল। ভবন দুটির সব পিলারে প্রায় ৭ হাজার গর্ত করে বিস্ফোরক ঢোকানো হয়। এর পাশাপাশি এটি যাতে মুহূর্তের মধ্যে মাটিতে মিশে যায় সেজন্য ২০ হাজার সার্কিট বসানো হয়। বহুতল এই দুই ভবন যাতে সরাসরি নিচের দিকেই ভেঙে পড়ে সেটি নিশ্চিত করার জন্য ‘জলপ্রপাত কৌশল’ অনুযায়ী বিস্ফোরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।
রোববার সকালের দিকে ওই এলাকার ৭ হাজার বাসিন্দাকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। বহুল আলোচিত এই টাওয়ার ভবন ধ্বংসের আগে আশপাশে সব ভবনের গ্যাস এবং বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সময় বিকেল চারটার দিকে ওই এলাকায় গ্যাস এবং বিদ্যুতের সংযোগ পুনরায় চালু হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে এলাকার বাসিন্দারা ফিরতে পারবেন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে। এলাকায় ফেরার পর দীর্ঘ সময় পর্যন্ত বাসিন্দাদের বাসার ভেতরেও মাস্ক পরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.