চট্টগ্রাম চেম্বারকে বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের অঙ্গীকার: সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের ইশতেহার ঘোষণা
চট্টগ্রাম, ৩০ অক্টোবর:
চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষা ও জবাবদিহিতামূলক একটি আধুনিক চেম্বার গঠনের অঙ্গীকার নিয়ে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে। দীর্ঘ ১৩ বছর পর আসন্ন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন আগামী ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
বুধবার রাতে চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইশতেহার ঘোষণা করেন পরিষদের প্যানেল লিডার এস. এম. নুরুল হক। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য চট্টগ্রাম চেম্বারকে একটি জবাবদিহিতামূলক, ব্যবসায়ীবান্ধব ও বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা।”
ইশতেহারে বলা হয়, নির্বাচিত হলে চেম্বারের আলোচিত ট্রেড গ্রুপ ও টাউন অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে। ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষা, প্রশাসনিক সংস্কার, বন্দর ও বিমানবন্দর আধুনিকায়ন, বিনিয়োগ ও রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
মূল অঙ্গীকারসমূহ:
ব্যবসায়ীদের ভ্যাট ও ট্যাক্স সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে গঠন করা হবে “ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার”, যেখানে কর সংক্রান্ত পরামর্শ ও আইনি সহায়তা এক জায়গায় পাওয়া যাবে।
আমদানি-রপ্তানির স্বচ্ছতা ও গতি বাড়াতে চালু করা হবে ডিজিটাল পোর্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) জন্য সহজ শর্তে ঋণপ্রাপ্তি এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সহায়তা তহবিল গঠনের অঙ্গীকার।
ব্যবসায়ীদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মসূচি চালুর ঘোষণা; ডিজিটাল মার্কেটিং, ই-কমার্স ও আধুনিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণের উদ্যোগ।
বাজারে ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত ও একচেটিয়াত্ব বন্ধে কার্যকর ভূমিকা পালনের প্রতিশ্রুতি।
চট্টগ্রাম নগরের সড়ক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
অসুস্থ বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তায় গঠন করা হবে “ব্যবসায়ী কল্যাণ তহবিল”।
চেম্বারের সদস্য নিবন্ধন, নবায়ন, সার্টিফিকেট ও অভিযোগ দাখিলসহ সব কার্যক্রম সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করার অঙ্গীকার।
প্রশাসনিক হয়রানি রোধে গঠন করা হবে লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ডেস্ক।
এস. এম. নুরুল হক বলেন, “চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃদপিণ্ড। এই শহরের উন্নয়ন ছাড়া জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতি কল্পনাই করা যায় না। আমরা এমন একটি চেম্বার গড়তে চাই, যা সত্যিকার অর্থে ব্যবসায়ীদের কণ্ঠস্বর হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— মো. কামরুল হুদা, মোহাম্মদ আইয়ুব, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, এস. এম. কামাল উদ্দিন, এটিএম রেজাউল করিম, আহমেদ রশিদ আমু, আহমেদ-উল আলম চৌধুরী (রাসেল), ইমাদ এরশাদ, জসিম উদ্দিন চৌধুরী, কাজী ইমরান এফ. রহমান, মো. আবচার হোসেন, মো. আরিফ হোসেন, মো. হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী, মোহাম্মদ আজিজুল হক, মোহাম্মদ রাশেদ আলী ও মোহাম্মদ মুছা।
সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান শাহজাহান মহিউদ্দিন।
ইশতেহার ঘোষণার সময় সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের ১৮ জন প্রার্থীকেও পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.