পুলিশ ভীতি দূর করে নগরবাসী ও গণমাধ্যমকে নিয়ে কাজ করতে চাই: সিএমপি কমিশনার

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়

২৫৯

জনগনের মন থেকে পুলিশ ভীতি, অপরাধ ভীতি দূর করে নগরবাসী ও গণমাধ্যমকে নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের নবনিযুক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। যোগদানের পর আজ শনিবার (২৩ জুলাই) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

মিডিয়াকে পুলিশের আয়না উল্লেখ করে তিনি সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং বলেন, সাংবাদিকরা পুলিশের মূল অংশীদার। বলেন, আমাদের ভুল-ত্রুটি হতে পারে। সাধারণ মানুষের পরিচিতি পোশাকে দেখা যায় না। কিন্তু পুলিশ পোশাকেই পরিচিত। আমরা এই পোশাককে ভালো কাজের সুযোগ হিসেবে নিতে চাই। আর এক্ষেত্রে সাংবাদিকরা আমাদের কাজের অনন্য অনুপ্রেরণাকারী হিসেবে কাজ করেন। ভালো কাজের সংবাদ মিডিয়ায় আসলে পুলিশ অনুপ্রেরণা পায়। নাগরিকদের কাছে যেতে হলে অবশ্যই সাংবাদিকদের সহযোগিতা লাগবে কারণ নাগরিকদের বিশেষ প্রতিনিধি হলেন সাংবাদিক। তাই আগামীতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন নতুন সিএমপি কমিশনার।

সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস।

পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, এই উপমহাদেশে ১৮৬১ সাল থেকে কাজ করছে পুলিশ। বর্তমান আইজিপি পুলিশের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন। আমরা এই মাত্রা শুন্যে আনার জন্য কাজ করছি। একইসঙ্গে মাদক নিয়ন্ত্রণে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। জনগণের সেবা করতে হলে পুলিশকে অবশ্যই পেশাদার এবং মানবিক আচরণ করতে হবে। এর মাধ্যমে পুলিশভীতি দূর করে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে।

পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জনগণ পুলিশ বাহিনীকে কোন দৃষ্টিতে দেখছেন, সেই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই কাজ করতে হবে। যদি আমি নিজেকে স্যালুট করতে না পারি, তাহলে অন্যরাও আমাকে স্যালুট করবে না। আমাদের জীবন সুখে থাকলে আমরা আনন্দময়। আর আমার কারণে যদি জনগণ সুখে থাকেন, তাহলে সেই আরো বেশি আনন্দময়। পুলিশের কাজে সফলতা অর্জনের জায়গা অনেক বড়।

সিএমপি কমিশনার বলেন, সিএমপি’র ১৬ টি থানায় মাসে গড়ে পাঁচ শতাধিক মামলা হয়। পুলিশের মাসিক অপরাধ দমন বৈঠকে কোন থানায় কতটি মামলা হলো, তা নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু মামলা বেশি-কমে জনগণের কিছু যায় আসে না। মূল কথা হচ্ছে, পুলিশের কাজ মানুষের পছন্দ হতে হবে। সিঙ্গাপুর-ইংল্যাণ্ডে আমরা বেড়াতে গেলে নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াতে পারি। কিন্তু আমাদের শহরে এখনো নির্বিঘ্নে ঘুরতে পরি না। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। পুলিশের স্ত্রী স্বামীকে ভালো বললেও পুলিশ স্বামী কেমন, সেক্ষেত্রে অনেকেই নেতিবাচক কথা বলেন।

প্রেস ক্লাব সভাপতি আলহাজ্ব আলী আব্বাস বলেন, বর্তমান পুলিশ কমিশনার প্রধানমন্ত্রীর স্নেহভাজন চৌকষ অফিসার। একাধিক পুরস্কার অর্জনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে তিনি তা প্রমাণ করেছেন। এতো ব্যস্ততার মাঝেও তিনি প্রেস ক্লাবে এসেছেন। আমাদের সময় দিয়েছেন। সেইজন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি ইতোপূর্বেও চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। যে কারণে অধিকাংশ সাংবাদিকদের পরিচিত মুখ। তিনিও ব্যক্তিগতভাবে অনেক সাংবাদিককে চেনেন। তিনি চট্টগ্রামের পুলিশকে জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ উজ্জ্বল করবেন। চট্টগ্রামের নিয়ন্ত্রিত আইন-শৃঙ্ক্ষলা পরিস্থিতি আরো উন্নত করবেন- এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে’র সভাপতি শহীদ উল আলম এবং সিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে অতিথিকে প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছ এবং সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

এ সময় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, সিইউজের সি. সহ-সভাপতি রতন কান্তি দেবাশীষ, সহ-সভাপতি অনিন্দ্য টিটো, বিএফইউজে’র সাবেক যুগ্ম মহাসচিব তপন চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের অর্থ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হায়দার,গ্রন্থাগার সম্পাদক মিন্টু চৌধুরী, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলীউর রহমান, কার্যকরী সদস্য দেবদুলাল ভৌমিক, মনজুর কাদের মনজু, প্রথম আলোর বার্তা সম্পাদক ওমর কায়সার, কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান মুস্তফা নঈম, এটিএন বাংলার আবুল হাসনাত, আমাদের সময়ের ব্যুরো প্রধান হামিদ উল্লাহ, দেশ টিভির ব্যুরো প্রধান আলমগীর সবুজসহ বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.