করোনায় মারা যাওয়া আসমা হয়ে গেলেন ‘বেওয়ারিশ’
ঔষধ আনার নামে আর আসেননি স্বামী মোজাম্মেল
বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আসমা আক্তার। আসমা নগরীর আগ্রাবাদ ডবলমুরিং থানা এলাকার মৌলভি পাড়ার মোজাম্মেলের স্ত্রী। চমেক হাসপাতালের পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার সকালে আসমা আক্তারকে করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করে দিয়ে ঔষধ আনার নামে বের হয়ে আর হাসপাতালে আসেননি স্বামী মোজাম্মেল।
গত রাতে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে দেওয়া মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করে ঘটনা জানানোর সাথে সাথে মোবাল সুইচ অফ করে দেন আসমার স্বামী মোজাম্মেল। মারা যাবার পর আর কোন স্বজন আসমার কাছে ঘেষেনি।
মৃত্যুর পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ায় নগরীর ডবলমুরিং থানার মৌলভীপাড়া এলাকার আসমা আক্তারের লাশের কাফন-দাফনের দায়িত্ব নেয় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকাল ৪টার দিকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন আসমা আক্তারের মরদেহ গোসল ও দাফনের ব্যবস্থা করে।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন চট্টগ্রামের দাফন-কাফন কার্যক্রমের সমন্বয়ক কামরুল হাসান সবুজ বলেন, পুলিশের অনুরোধে আমরা আসমার লাশের দাফনের দায়িত্ব নিই। ইতোমধ্যে তার গোসল ও কাফনের কাজ শেষ। এখন শুধু প্রশাসনের উপস্থিতিতে দাফন করা বাকি।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক জানান, হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে তার স্বামী মোজাম্মেল তার মোবাইল ফোন নম্বর এন্ট্রি করে যান। আসমা আক্তার মারা যাওয়ার পর যোগাযোগ করলে সেই মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাই। পরে তার মৃত্যুর খবর ডবলমুরিং থানাকে জানানো হয়। থানা থেকে তার ঠিকানায় সংবাদও পাঠানো হয়।
ডবলমুরিং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহিম বলেন, থানা থেকে আসমা আক্তারের মৃত্যুর খবর পেয়ে মৌলভীপাড়ায় তার বাসায় যাই। বাসা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ দেখি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আসমার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি।
৬ জুলাই করোনা উপসর্গ নিয়ে আসমা আক্তার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে নমুনা পরীক্ষার পর তার করোনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। দুইদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বৃহস্পতিবার তিনি করোনার কাছে হেরে যান। তার স্বামীও তাকে ফেলে চলে যান। বেওয়ারিশ পড়ে থাকে আসমা আক্তারের লাশ।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.