বর্ণিল আয়োজনে পালিত হলো ৫৭তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস

১৫৭

বর্ণিল আয়োজনে পালিত হলো ৫৭তম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে এবং শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত করে এর উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার। এর পর বের হয় সুসজ্জিত ব্যান্ড দলের ব্যান্ডের সুরের মূর্ছনায় আনন্দ শোভাযাত্রা। এরপর চবি বঙ্গবন্ধু চত্বরে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার এবং অতিথিবৃন্দকে সাথে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

সকাল ১১ টায় চবি’র জারুলতলায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ও চবি এলামনাই ড. হাছান মাহমুদ। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কেক কাটেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও স্মৃতিচারণ করেন চবি’র উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর বেনু কুমার দে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবদুল করিম এবং সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম।

আলোচনা সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু চেয়ার বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড. মুনতাসীর মামুন। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চবি’র সাবেক উপ-উপাচার্য ও উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোঃ আলাউদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ, সাবেক চাকসু ভিপি মাজহারুল হক শাহ ও চাকসু ভিপি নাজিম উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, প্রায় ৪১ বছর আগে আমি এখানে ছাত্র হিসেবে ভর্তি হয়েছিলাম; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমার হৃদয়ের মনিকোঠায় সবসময় সবুজ ও সতেজ। দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সবচেয়ে সুন্দর। এখানে যখন আসি তখন আমি স্মৃতিকাতর হয়ে যাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু পাঠদান নয়, ডিগ্রী প্রদান নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ হলো জ্ঞানের চর্চা করা এবং এ জ্ঞানের চর্চার মাধ্যমে বিশ্বকে জয় করা।’ তিনি বলেন, ‘অবয়ব বা অবকাঠামো উন্নয়ন সার্বিক উন্নয়ন নয়; প্রকৃত উন্নয়ন হলো পাঠদানের উন্নয়ন, জ্ঞানের উন্নয়ন এবং বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক চর্চার উন্নয়ন।’ ড. হাছান মাহমুদ বাৎসরিক কর্ম-ক্যালেন্ডার তৈরীর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি বেশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার-সিম্পোজিয়াম আয়োজন করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে শিক্ষক-গবেষকবৃন্দের গবেষণা কার্যক্রমসহ সকল অর্জন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে সক্ষম হবে এবং বিশ্বদরবারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি পাবে।

ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা শিক্ষা-গবেষণা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন এবং দেশ ও সমাজ গঠনে অপরিসীম ভূমিকা রেখে চলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ধারাবাহিক ভাবে মানসম্মত জার্নাল প্রকাশের বিষয় উল্লেখ করে বলেন, এ জার্নালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশ বিদেশের গবেষকদের গবেষণা কার্যক্রম প্রকাশিত হবে যা বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব বৃদ্ধি করবে। তথ্য মন্ত্রী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান-গবেষণাসহ সার্বিক ভাবে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে বলেন, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞান-গবেষণার অন্যতম তীর্থস্থান। দেশে বহুমাত্রিক দক্ষতা সম্পন্ন যোগ্য ও আলোকিত মানবসম্পদ তৈরীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নিরিখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাতারে সামিল করতে উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এলামনাইসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন চবি প্রক্টর ও ৫৭তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য-সচিব ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহকারী প্রক্টর মরিয়ম ইসলাম।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.