‘চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা অতীতের রেকর্ড ভঙ্গ করবে’

১৪৪

আগামী ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিতব্য প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জনসভা চট্টগ্রামের অতীতের সব জনসভার রেকর্ড ভঙ্গ করবে বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ অনেক শক্তিশালী। ইনশাআল্লাহ, পলোগ্রাউন্ড উপচে পড়বে।

বুধবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের জনসভা উপলক্ষ্যে কাজীর দেউড়ির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ প্রতিনিধি সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ক্ষমতা গ্রহণের ১০ বছর পর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড ময়দানে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ও স্থানীয় ইস্যু সম্পর্কে মুক্তকণ্ঠে কথা বলবেন জানিয়ে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, জনসভা সফল করে তোলার জন্য চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিটি স্তরের নেতাকর্মীদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। বিএনপি-জামায়াত বিভাগীয় সমাবেশের মাধ্যমে সারা দেশে অরাজকতা সৃষ্টির যে পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে আমাদের মাঠে থাকতে হবে এবং এটাও মনে করি বর্তমানে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময় এবং রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও সংকট তৈরি হয়েছে তা মোকাবেলা করার জন্য প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিকের সমান দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের প্রত্যেককে দেশপ্রেমে প্রাণিত হয়ে রাজনীতি করতে হবে এবং সমাজকে ভালোবাসতে হবে। এটাও সত্যি কথা যে, একটি অসৎ উদ্দেশ্যে দেশে অরাজকতা ও নাশকতার মাধ্যমে দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র অবশ্যই মোকাবেলা করতে হবে।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, চট্টগ্রামবাসী মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি। এই শক্তির প্রতি জাতির যে আস্থা ও ভরসা রয়েছে তা যেন ভুল প্রমাণিত না হয়। ষড়যন্ত্র এবং অপঘাত মোকাবেলায় চট্টগ্রামের মাটি বার বার প্রতিবাদী ভূমিকা পালন করেছে। সংগঠন শক্তিশালী না হলে স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি-জামায়াত অপশক্তিকে মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এই অপশক্তিকে পশ্চিমা অনেক শক্তি আছে যারা উসকানি দিচ্ছে, টাকা-পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করছে। এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হলে আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সমালোচনা করে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ফখরুল সাহেব বললেন- আমাদের সরকার নাকি সব রিজার্ভ শেষ করে ফেলেছে, চিবিয়ে খেয়েছে। বৈশ্বিক সংকটের কারণে এবং নতুন কিছু প্রজেক্টে বিনিয়োগের কারণে আমাদের রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। সেটা নিয়ে বিএনপি বলছে রিজার্ভ সংকটে আছে। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ ছিল মাত্র ৩ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার। আর এখন ৩৯ বিলিয়ন ডলার। এই কথাগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। তাহলে জনগণ বাংলাদেশকে পিছিয়ে নেওয়ার সুযোগ বাংলাদেশকে দেবে না।

আমরা কোনো শক্তিকে খাটো করে দেখতে চাই না। মোকাবেলার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে জনসভা হবে। পলোগ্রাউন্ডের জনসভায় চট্টগ্রাম জেলার সব উপজেলা-ইউনিয়ন, মহানগরের ৪১ ওয়ার্ডের সব ইউনিটের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে হাজির থাকতে হবে।

সভায় পলোগ্রাউন্ডের সমাবেশ থেকে বিএনপি-জামায়াতকে লালকার্ড দেখানো হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া।
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন ৪ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর চট্টলায় আসবেন। এই উপলক্ষে আজকের এই প্রস্তুতি সভা। এখানে কিছু কথা না বললেই নয়। বৈশ্বিক সংকটকে পুঁজি বিএনপি-জামায়াত টেনে হেছড়ে নেত্রীকে নামিয়ে ফেলবে বলে হুশিয়ারি দিচ্ছে। তাই আগামী ৪ ডিসেম্বর আমাদের সভা হচ্ছে এই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে লালকার্ড।’

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার আগমন এবং ৪ ডিসেম্বরে পলোগ্রাউন্ডে অনুষ্ঠেয় জনসভা সফল করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি ও নির্দেশনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম. রেজাউল করিম চৌধুরী, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।

বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দীন আহমেদ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, মাহফুজুর রহমান মিতা, খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.