এটিএম পেয়ারুল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত

২১৬

চট্টগ্রামে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত এটিএম পেয়ারুল ইসলাম। আনারস প্রতীকে তিনি পান ২ হাজার ৫৬৭ ভোট। তার নিকটতম জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির মহাসচিব নারায়ণ রক্ষিত মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়েপান ১২৪ ভোট।

সোমবার (১৭ অক্টোবর) ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান।

তিনি বলেন, ১৫টি কেন্দ্রে ২ হাজার ৭৩০ ভোটারের মধ্যে ২ হাজার ৬৯৬ জন ভোট দিয়েছেন। যা ৯৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর মধ্যে আনারস প্রতীক নিয়ে এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ২ হাজার ৫৬৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে নারায়ণ রক্ষিত পেয়েছেন ১২৪ ভোট।

এর আগে, সকাল ৯টা থেকে টানা ২টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা সদরে স্থাপিত ভোটকেন্দ্রে ইভিএমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের প্রতিটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ মনিটরিং করার জন্য প্রতি ভোটকেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছিল সিসিটিভি ক্যামেরা। এসব ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচনে ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করে ঢাকার নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস থেকে।

উল্লেখ্য, নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ৭৩০ জন। চট্টগ্রামের ১৫টি কেন্দ্রে ২ হাজার ৬৯৪ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। ১৫টি ওয়ার্ডের ১৫টি ভোটকেন্দ্রের ৩০টি বুথে চলে ভোটগ্রহণ। ভোটগ্রহণে ১৫ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ৩০ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ৬০ জন পোলিং কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। চট্টগ্রামের জেলা পরিষদ নির্বাচনে ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৭০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে একজন, সাধারণ সদস্য ১৫ জন ও ৫ জন সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত হন।

কেএই পেয়ারুল ইসলাম?
এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ১৯৬০ সালের ১০ আগস্ট ফটিকছড়ি উপজেলার নানুপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন করা সরকারি কর্মকর্তা মরহুম আবুল ফজল বি.এ ও আমেনা বেগমের সন্তান তিনি। তাঁর দাদা তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী ছিলেন ব্রিটিশ আমলের আইনজীবী, সমাজসেবক ও শিক্ষাবিদ। নানা প্রখ্যাত জমিদার মোখলেছুর রহমান চৌধুরী ও মামা বিশিষ্ট সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী ও দানবীর আদালত খান। সাবেক এমপি ও রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরী, রাজনীতিবিদ ও ভাষা সৈনিক অ্যাডভোকেট এমদাদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট রফিকুল আলম ও ন্যাপ নেতা এমএম শহীদুল্লাহর খালাতো ভাই তিনি। তাঁর শ্বশুর বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) আবু তাহের সালাহউদ্দীন বীর প্রতীক।

এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ১৯৭৪ সালে মাইজভাণ্ডার আহমদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল-ছাত্র সংসদে নির্বাচিত জিএস হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৭৯ সালে নির্বাচিত হন নাজিরহাট কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি। ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং বাংলাদেশ ‘ল’ স্টুডেন্টস ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাচিত সভাপতি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক, নব্বইয়ের ছাত্র গণ-আন্দোলনের ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। ১৯৯০ সালে ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ঢাকাস্থ চট্টগ্রাম সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক এবং ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন।

বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। এটিএম পেয়ারুল ইসলাম ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফটিকছড়ি সংসদীয় আসন থেকে মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সফল ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তা। তিনি দুই পুত্র সন্তানের জনক। বড় সন্তান ও পুত্রবধূ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা। ছোট ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.