চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গনে সংগঠনের দুই সদস্যের ওপর হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)। দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলাকারী আইনজীবীদের গ্রেফতার ও বার কাউন্সিল সনদ বাতিলের জন্য তিনদিনের আল্টিমেটাম দেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। অন্যথায়, সারাদেশের সাংবাদিকদের নিয়ে ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে সিইউজে সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, চট্টগ্রামের যে কোন প্রগতিশীল আন্দোলন-সংগ্রামে আইনজীবীদের সঙ্গে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন সাংবাদিকরা। দীর্ঘদিনের এই সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যেই আদালত প্রাঙ্গনে আইনজীবী পরিচয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলা অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা বিশ্বাস করি দেশবিরোধী কোন স্বার্থের ইন্ধনে আইনজীবী পরিচয়ে সাংবাদিকদের ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। কারণ, জঙ্গী হামলার রায়ের ঘটনার সংবাদ করতে গিয়ে দুই সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন। দোষীদের চিহ্নিত করে আইনজীবী সমিতিকে তাদের সদস্যপদ বাতিলসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। হামলাকারীদের তিনদিনের মধ্যে তাদের আইনজীবী সনদ বাতিল না করলে ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে সাংবাদিক সমাজ কঠোর আন্দোলন শুরু করবে বলে বক্তব্যে জানান সিইউজে সভাপতি।
সমাবেশে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলহাজ্ব আলী আব্বাস বলেন, সারাদেশে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর অব্যাহত হামলা দু:খজনক। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে বারবার সাংবাদিকদের ওপর এ ধরণের হামলার ঘটনা ঘটছে। দোষীরা যাতে কোন পার না পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তা নিশ্চিত করতে হবে।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ বলেন, দুই সাংবাদিকের ওপর ঠুনকো অজুহাতে দুই দফায় হামলা হয়েছে। আইনজীবী পরিচয়ে কিভাবে আদালত পাড়ায় এ বেআইনী ন্যাক্কারজনক হামলা হলো তা রহস্যজনক। কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল আইনজীবী চট্টগ্রাম আদালতে কর্মরত দশ হাজার আইনজীবীর প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। আইনজীবী সমিতিকেই দোষীদের চিহ্নিত করতে হবে।
সিইউজে সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম বলেন, নগরীর নিউ মার্কেট এলাকায় সাংবাদিক প্রীতম দাশের ওপর হামলার ঘটনার সপ্তাহ না যেতেই আদালত প্রাঙ্গনে আরও দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার ঘটনার ভিডিও ফুটেজ, ছবিসহ সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকার পরও যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তা হবে দু:খজনক। সাংবাদিক সমাজ দেশের আপামর জনসাধারণকে নিয়ে এ দুর্বৃত্তদের রুখে দাঁড়াবে।
সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ’র সঞ্চালনায় এছাড়াও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিইউজের সিনিয়র সহসভাপতি রতন কান্তি দেবশীষ, সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটো, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব তপন চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাসির উদ্দিন তোতা, সাধারণ সম্পাদক লতিফা আনসারী রুনা, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য আজহার মাহমুদ, প্রণব বড়ুয়া অর্ণব, সিইউজের টিভি ইউনিট প্রধান মাসুদুল হক, চট্টগ্রাম ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ চক্রবর্তী, চট্টগ্রাম টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন, যমুনা টিভির ব্যুরো প্রধান জামশেদ রেহমান চৌধুরী প্রমুখ।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের সাবেক সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, মোস্তাক আহমদ, সাবেক নির্বাহী সদস্য শামসুল হুদা মিন্টু, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের গ্রন্থাগার সম্পাদক মিন্টু চৌধুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলীউর রহমান, মনজুর কাদের মনজু, সদস্য দেবদুলাল ভৌমিক, শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার, সিইউজের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইফতেখার ফয়সাল, সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আহমেদ কুতুব, প্রতিনিধি ইউনিটের ডেপুটি চিফ সরওয়ার আলম সোহেল প্রমুখ।
এছাড়াও, সমাবেশে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ’র চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.