চান্দগাঁওয়ে গৃহকর্মী নির্যাতন: নারী চিকিৎসক গ্রেফতার
চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে কিশোরী গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে নাহিদা আক্তার নামে এক চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কিশোরী গৃহকর্মীকে অমানুষিক নিযাতন, মাথার চুল কেটে দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
নির্যাতনের শিকার তসলিমা আক্তারের (১৫) বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায়। তার বাবার নাম আব্দুল গণি।
ভিকটিম কিশোরীর পুরো শরীরেই নিযাতনের চিহ্ন রয়েছে। চোখ মুখ থেকে শুরু কোরে গলা, হাত-পিঠ শরীরের কোনো অংশেই বাদ যায়নি নির্যাতন থেকে। কোনো কারণ ছাড়াই লাঠি দিয়ে পেটানো হত বলে অভিযোগ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) রাতে চান্দগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) রাজেস বড়ুয়া গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতার চিকিৎসক নাহিদা আক্তার (৩৪) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ৪৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি চমেক হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
নাহিদা আকতার নামের ওই নারী চিকিৎসকের শিশু সন্তান গৃহপরিচারিকা কিশোরীর মাথায় হাত লাগিয়ে সেই হাত পুনরায় মুখে দেয় বলে জোরপূর্বক তার চুলও কেটে দেওয়া হয়। আর সবশেষে কাজল দেওয়ার অপরাধে আঘাত করা হয় ওই কিশোরীর চোখে।
নির্যাতিতার এক আত্মীয় বলেন, বাসায় কুড়িয়ে পাওয়া কাজল ভিকটিম কিশোরী ব্যবহার করায় তার চোখ, গলাসহ শরীরে বিভিন্নস্থানে আঘাত করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, ঈদের আগে দিন তার পিতা লোহাগাড়া থেকে মেয়েকে দেখতে আসলে জানানো হয়, তাসলিমা বাসায় নেই। কিন্তু অনেকক্ষণ বাইরে অপেক্ষা করার পর জানালা দিয়ে নির্যাতিত গৃহকর্মী তাসলিমাকে দেখতে পান তার পিতা। এসময় ইশারায় তাকে নির্যাতনের কথা জানায়। এরই মাঝে ডা. নাহিদা মোহরার বাড়িতে কোরবানিতে দিতে আসেন নির্যাতিত গৃহকর্মীসহ। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে চান্দগাঁও থানা পুলিশ নির্যাতিত তাসলিমাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠায়। একইসাথে অভিযুক্ত গৃহকর্তী ডা. নাহিদাকে আটক করে।
চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, অভিযোগ শোনামাত্র আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। সেখানে গিয়ে ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। পরে অভিযুক্ত ডাক্তার নাহিদা আকতারকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। নির্যাতনে অসুস্থ কিশোরীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় রাতে গৃহকর্মী তাসলিমার বাবা আব্দুল গণি একটি মামলা দায়ের করেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.