পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে : মেয়র শাহাদাত

নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসণে কালিরছড়াসহ সব খাল উদ্ধারের পাশাপাশি পাহাড় খেকোদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর আকবরশাহ এলাকার লেকসিটি আবাসিক এলাকায় কালিরছড়া খাল পরিদর্শনকালে এ ঘোষণা দেন মেয়র।

মেয়র বলেন, আমরা এখানে কালিরছড়া খাল দেখতে এসেছি। এক সময় চট্টগ্রামে প্রায় ৫৭টি খাল ছিল। কিন্তু আজ এই সংখ্যা নেমে এসেছে মাত্র ৩৬টিতে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সিডিএর উদ্যোগে যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, সেখানে ৫৭টি খাল থেকে কাজের জন্য ৩৬টি খাল চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এখনো ২১টি খাল অবহেলিত রয়ে গেছে। আমরা এই ২১টি খাল উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।

“কালিরছড়া খালটি চট্টগ্রামের আকবরশাহ এলাকায় অবস্থিত। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে পাহাড় কাটার কারণে এই খালের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এখানে পাহাড় যারা কেটেছে তারা দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পোষ্য ছিল। এক-একজন কাউন্সিলর ছিল ভূমিদস্যু, এক-একজন ডাকাতের সরদার ছিল। এই যে জসিম সে একজন ভূমিদস্যু। পাহাড় কাটার জন্য সে বিখ্যাত ছিল কিন্তু তার বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগ সরকার আইন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি তারা তাকে গ্রেপ্তারও করেনি এবং শাস্তির আওতায় আনতে পারেনি।

পাহাড়কাটার পেছনে অনির্বাচিত শক্তি কাজ করেছে দাবি করে মেয়র বলেন, রাষ্ট্র এ সমস্যার জন্য দায়ী। ভোটের অধিকার হরণ করে অপরাধীদের কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই অপরাধীদের মাধ্যমে দখল, লুটপাট ও দুর্নীতির শিকার হয়েছে শহরটি। গত ১৬ বছর ধরে চলা এই অব্যবস্থাপনার কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বাড়ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না যদি আমরা তাদের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ রেখে যেতে ব্যর্থ হই।

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য খালগুলো পুনরুদ্ধার করা। ইতিমধ্যে আমরা কালিরছড়া খালের কিছু অংশ দখলমুক্ত করেছি এবং আরো উচ্ছেদ কার্যক্রম চলছে। চট্টগ্রামের ২১টি খাল, যেমন পতেঙ্গার গুপ্ত খাল, বাকলিয়ার বীর্জা খাল, এবং কৃষি খাল পুনরুদ্ধারের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই খালগুলো চিহ্নিত করে খনন কর্মসূচি শুরু করতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে এটি একটি স্থায়ী সমাধান হয়ে উঠবে।

খালখেকোদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে মেয়র বলেন, আমরা দৃঢ় সংকল্প করেছি যে, দখলদারদের আইনের আওতায় এনে খালগুলোকে পুনরুদ্ধার করব। খাল থাকবে খালের জায়গায়, এবং নালা থাকবে নালার জায়গায়। পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ইনশাল্লাহ, আমরা চট্টগ্রামকে বাসযোগ্য শহরে পরিণত করব। যে ভূমিদস্যুরা দখল করে রেখেছে এবং অন্যায়ের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য শহর উপহার দেওয়ার লক্ষ্যেই আমাদের কাজ চলতে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, মাহমুদ শাফকাত আমিন, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী (মারুফ) সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.