ডিমের আড়তে গুলি ছুঁড়ে টাকা লুট, সন্ত্রাসী মনসুর বরগুনায় গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী বাজারে ডিমের আড়তে গুলি ছুঁড়ে ৮০ হাজার টাকা লুটের ঘটনায় সন্ত্রাসী মনসুর আহমদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে তাকে বরগুনা থেকে গ্রেপ্তার করে খুলনা পুলিশ। আজ মঙ্গলবার  সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) কাজী তারেক আজিজ।

তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে খবর পেয়ে পুলিশ বরগুনা থেকে সন্ত্রাসী মনসুরকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে সব ঘটনা স্বীকার করে নিয়েছে গ্রেপ্তার মনছুর। তার দেয়া তথ্যে খুলশীর রেলওয়ের ক্যান্টিন গেটস্থ কালভার্টের পশ্চিম পাশে নালার মধ্যে মাটির নিচ থেকে কালো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো একটি দেশিয় এলজি ও ২ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় খুলশী থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অতিরিক্ত উপ-কমিশনার তারেক আজিজ আরো জানান, মনছুরের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র-ডাকাতি-চাঁদাবাজির ৭টি মামলা এবং দেশের বিভিন্ন থানায় আরো ৯টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় চট্টগ্রাম নগর এলাকায় ভাড়ায় নিয়োজিত হয়ে ছাত্র-জনতার ওপরে হামলা করার কথা জানিয়েছে মনছুর।

গ্রেপ্তার মনসুর এর আগে ২০১৮ সালের পাহাড়তলী ডিমের বাজারে রানা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ডিমের আড়তে লুটতরাজ চালাতে গিয়ে মাসুদ রানা নামে এক ব্যবসায়ীকে খুন করে। ওই ঘটনায় তার স্ত্রী কোহিনুর বেগম ও তাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

জামিনে বেরিয়ে আবারো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে মনসুর। গত ২৩ আগস্ট রাত ৩টার দিকে পাহাড়তলী বাজারের ব্যবসায়ী মো. হেলালের ডিমের আড়ত থেকে তার নেতৃত্বে চারজন সন্ত্রাসী ৮০ হাজার টাকা লুট করে। যাওয়ার সময় ফাঁকা গুলি ছোড়ে, যাতে কেউ এগিয়ে আসতে না পারেন। এ ঘটনা ছাড়াও মনসুর গত ৪ নভেম্বর খুলশীর প্রীতিলতা রেলওয়ে হাসপাতাল কলোনির একটি অটোরিকশা গ্যারেজে ত্রাস সৃষ্টি করে মো. ইলিয়াস নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে। খুলশীর ২ নম্বর গেট বেবী সুপার মার্কেট সংলগ্ন আনোয়ারা গার্মেন্টেসের সামনে গত ২১ অক্টোবর সংঘটিত স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনার প্রকৃত আসামিও মনছুর।

গত ২৩ আগস্ট দিবাগত রাত তিনটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী বাজারের একটি ডিমের আড়তের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজে মনসুরের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দৃশ্য ধারণ করা আছে। ওই ফুটেজে দেখা যায়, ওই ডিমের আড়তে হঠাৎ অস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়েন মনসুর ও তাঁর তিন সহযোগী সন্ত্রাসী। পরে দোকানের ক্যাশ থেকে তাঁরা ৮০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় ছোড়েন ফাঁকা গুলি, যাতে কেউ এগিয়ে আসতে না পারেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরের পাহাড়তলীর দুলালাবাদ এলাকার আবদুল মালেক দারোয়ানের বাড়ির মৃত জমির আহাম্মদের ছেলে মনসুর। বিভিন্ন সময় চুরি-ছিনতাই করে অপরাধে জড়ান তিনি। ধীরে ধীরে এলাকায় ১৫ থেকে ২০ জনের দল গঠন করে শুরু করেন নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। পাহাড়তলীর সরাইপাড়া ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা সাবের আহমদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত মনসুর।

 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.