স্বাধীনতার পক্ষে মনন তৈরী জন্যই বঙ্গবন্ধু ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

১৩

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পূর্ব বাংলার মানুষের মাঝে স্বাধীনতার পক্ষে মনন তৈরী করার জন্যই বঙ্গবন্ধু ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন। ছয় দফার পক্ষে মানুষ ব্যাপক সাড়া দেন। বঙ্গবন্ধু ছয় দফা নিয়ে সারাদেশ ঘুরে বেড়ান, যেখানেই বক্তব্য দেন সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হতো।

তিনি বলেন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু মুক্তি লাভ করেন।  ৬৯- এর গণঅভ্যুত্থানের পর ছয় দফার উপর ভিত্তি করেই দেশে সাধারণ নির্বাচন হয়। জনগণ ছয় দফার পক্ষেই ভোট দেয়। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান ন্যাশনাল এসেম্বিলিতে মেজরিটি পার্টির নেতা নির্বাচিত হন।

শুক্রবার (৭ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বাঙালির মুক্তি সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী  বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সংসদে ৭ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকার বেশি বাজেট ঘোষণা হয়েছে। গত ১৫ বছরে বাজেটের অংক সাড়ে ১১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কোন একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টার্নওভার বৃদ্ধি পাওয়া মানে সেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভালো চলছে। দেশের বাজেটের আকার যখন বৃদ্ধি পায় তখন বুঝতে হবে দেশ উন্নতি ও সমৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে। বিএনপি-জামাত বাজেট ঘোষণার আগেই বিবৃতি রেডি করে রাখে। গত ১৫ বছরের তাদের বিবৃতি-বক্তব্য যদি দেখেন তখন হুবহু মিল খুঁজে পাবেন।

দারিদ্রতার হার কমে আসা কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাজেট জনগণের কল্যাণে যদি না আসে, তাহলে গত ১৫ বছরে দারিদ্রতা ৪০শতাংশ থেকে নেমে ১৮.৭ শতাংশে কেমনে আসল? আর অতিদারিদ্রতা ২২শতাংশ ছিল, সেখান থেকে ৫.৭ শতাংশে কিভাবে নেমে এসেছে? এটি সম্ভবপর হয়েছে বাজেট বাস্তবায়নের কারণেই। এরা আসলে চোখ থাকতেও অন্ধ কান থাকতেও বধির। ওদের চোখ এবং কান যেন মহান আল্লাহ ঠিক করে দেন সেই প্রার্থনা করি।

ক্ষমতার হালুয়া রুটির ভাগ-বাঁটোয়ারার জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ যারা বিএনপি দল গঠন করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী ২ বছর ও একাধারে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের চার মেয়াদসহ ২২ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা তাদের পক্ষে এখন আর সহ্য হচ্ছেনা। এমনকি তারা সরকারের কোন উন্নয়ন অগ্রগতিও সহ্য করতে পারছে না। সেই কারণে তারা এখন নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন ২০১৪ ও ১৮ সালে সঙ্কট তৈরী করা হয়েছে। ২০২৪ সালেও সঙ্কট তৈরির অপচেষ্ঠা ছিল। কিন্তু সমস্ত সঙ্কট ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কারণে আওয়ামী লীগ আজকে পরপর চারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায়। বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। সেই কারণে তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেচে নিয়েছে। আওয়ামী লীগের সকল স্তরের নেতাকর্মীদের চোখ কান সবসময় খাড়া রাখতে হবে।’

দেশে বুদ্ধিজীবী কয়েক প্রকার উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একটা হচ্ছে সত্যিকারের বিশেষজ্ঞ, আরেকটা হচ্ছে বিশেষ কারণে অজ্ঞ বিশেষজ্ঞ, আরেকটা হচ্ছে সব বিষয়ে বিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ। কেউ পড়েছেন আইন তিনি অর্থনীতি কিংবা পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, কেউ পড়েছেন অর্থনীতি উনি আবার তেল গ্যাসের বিশেষজ্ঞ। এই কদিন দেখবেন এই বিশেষজ্ঞদের বক্তব্যে টেলিভিশনের পর্দা গরম হয়ে যাচ্ছে। তারা এবং বিএনপি-জামাত বলতে শুরু করেছে এই বাজেট জনগণের কোন কল্যাণে আসবে না।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সহ-সভাপতি এডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি নোমান আল মাহমুদ, কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.