ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখা থেকে ১৪৯ ভরি স্বর্ণ গায়েব, তদন্ত কমিটি গঠণ

৫০

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড চট্টগ্রামের চকবাজার শাখার লকার থেকে এক গ্রাহকের ১৪৯ ভরি স্বর্ণ গায়েবের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

রোববার (২ জুন) দুপুরে তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখার ম্যানেজার শফিকুল মাওলা নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এক গ্রাহকের রাখা স্বর্ণালঙ্কার থেকে গায়েব দেড়শ ভরি স্বর্ণ।  ব্যাংকের লকার থেকে স্বর্ণ চুরির কোনো সুযোগ নেই। তবুও তদন্ত কমিটি বিষয়টি তদন্ত করবে। গ্রাহককে দেওয়া হবে চুক্তিপত্র অনুযায়ী ইন্স্যুরেন্স।

ম্যানেজার শফিকুল বলেন, ‘আমাদের এক গ্রাহকের অভিযোগ, গত ২৯ মে তিনি তার তার লকার চেক করতে গিয়ে দেখেন তিনি যে মালামাল রেখেছেন তা ঠিকমতো পাননি। পরবর্তীতে গ্রাহক আমাদের কাছে মৌখিকভাবে এসে অভিযোগ করেছেন লকার থেকে ১৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার মিসিং। এরপর আমরা তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহককে বলেছি এক্ষেত্রে আমাদের কোনো কিছু করার নেই। উনি কি রেখেছেন উনি জানেন। আমাদের মনে হচ্ছে উনি মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন। আর অন্য কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা তা উনি জানেন। আমরা লকার সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সব সার্কুলার মেনেই আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছি।’

তিনি বলেন, ‘গ্রাহকের মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে আসলে গ্রাহক মিথ্যে বলছেন কিনা।’

জানা গেছে, নগরের বেভারলি হিল এলাকার বাসিন্দা ও ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক রোকেয়া বারী ব্যাংকের একটি লকারে প্রায় ১৪৯ ভরি স্বর্ণের গহনা রেখেছিলেন। ২৯ মে লকার ইনচার্জের সঙ্গে লকার রুমে প্রবেশ করে তিনি দেখতে পান যে, তার লকারটি খোলা এবং সেখানে কোনো গহনা নেই। পরে তিনি চকবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তবে এ ঘটনায় পুলিশ সাধারণ ডায়েরি না নিয়ে ভুক্তভোগীকে আদালতে ফৌজদারি মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন।

গ্রাহক রোকেয়া বারীর ছেলে ডাক্তার রিয়াদ মোহাম্মদ মারজুক বলেন, ‘২০০৭ সাল থেকে আমার মা এই শাখায় তার স্বর্ণের গহনা রাখার জন্য লকার ব্যবহার করে আসছেন। গত ২৯ মে দুপুর ১২টার দিকে ব্যাংকে গিয়ে লকার রুমের ইনচার্জকে তার লকার দেখার অনুরোধ করেন। মায়ের কাছে লকারের মূল চাবি আছে এবং আরেকটি ডুপ্লিকেট চাবি ইনচার্জের কাছে থাকে। লকার রুমে প্রবেশ করলে ইনচার্জ প্রথমে দেখেন যে মায়ের লকারটি খোলা। আমার মা লকারটি পরীক্ষা করে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান।

লকার খোলা থাকায় বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে চকবাজার থানার ওসিকে জানাই। তিনি ব্যাংকে এসে লকার রুম দেখেছিলেন। এরপর আমরা একটি সাধারণ ডায়েরিও করতে চেয়েছি। কিন্তু ওসি আমাদেরকে আদালতে মামলা করতে বলেছেন। আমি আইনজীবীর সাথে কথা বলেছি। আগামীকাল আদালতে মামলা করা হবে। যোগ করেন রিয়াদ মোহাম্মদ।

ডাক্তার রিয়াদ বলেন, ‘ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে ৭ দিনের সময় চেয়েছিলো। আমরা তাদেরকে আজ (রবিবার) পর্যন্ত সময় দিয়েছি। ঢাকা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এসে আজ এ বিষয়ে তদন্ত করার কথা। যাহোক, আমরা আগামীকাল মামলা করবো।’

এ বিষয়ে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালি উদ্দিন আকবর জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লকার রুমে কোনো ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা নেই। ঘটনাটির গুরুত্বের কারণে ভুক্তভোগীকে ফৌজদারি মামলা দায়েরের পরামর্শ দিয়েছি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.