নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে হামলা সহ সংঘটিত ঘটনায় মিশনের ব্যাখ্যা
বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্কে গত ২৪ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবসের প্রথমবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় মিশনের ব্যাখ্যা প্রদান করেছে।
জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান দিবসের প্রথমবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ২৪ আগস্ট ২০২৫ (রবিবার) বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্কে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করে । উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়-এর উপদেষ্টা মোঃ মাহফুজ আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রায় দেড় শতাধিক অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সার্বিক প্রস্তুতি ও নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের অনুরোধের প্রেক্ষিতে অনুষ্ঠানের পূর্বেই নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ কন্স্যুলেটের আশেপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে।
বাংলাদেশ কন্স্যুলেট জেনারেলে আয়োজিত মতবিনিময় সভাটি পণ্ড করার উদ্দেশ্যে এবং অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিকে সরাসরি আক্রমণ করার হিংস্র মনোভাব নিয়ে বিকাল ৫টা থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের সামনে অবস্থান নেয়। তারা বাংলাদেশ সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয় এবং অশ্লীল-অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানে আগত আমন্ত্রিত অতিথিদের ধাওয়া করে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে বাধা প্রদান করে। সময়ের সাথে সাথে তারা আরো নানাবিধ অপকৌশল অবলম্বন করে যার অংশ হিসেবে তারা অতিথিদের উদ্দেশ্যে ডিম নিক্ষেপ করে এবং অত্যন্ত ন্যাক্কারজনকভাবে বাংলাদেশ কন্স্যুলেট জেনারেলের প্রবেশপথের পার্শ্ববর্তী অন্য একটি অফিসের (একই ভবনের) কাঁচের দরজায় আঘাত করে যার প্রেক্ষিতে ওই দরজায় ফাটল ধরে। পুলিশ দুষ্কৃতিকারীদের এই ধরণের ধ্বংসাত্নক কাজে বাধা দেয় এবং কয়েকজনকে আটক করে। দুষ্কৃতিকারীদের এই ন্যাক্কারজনক ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ফুটেজ প্রমাণ হিসেবে ইতোমধ্যে পুলিশের হস্তগত হয়েছে এবং তাঁরা এই ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে মর্মে আশ্বস্ত করেছে।
পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা প্রধান অতিথিকে হেনস্তা করা ও জীবননাশের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকাসহ কন্স্যুলেট জেনারেলের চতুর্দিকে মধ্যরাত অবধি অবস্থান করে। তবে পুরো সময় নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয় ছিল।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি যথাসময়ে কন্স্যুলেট জেনারেলে গাড়িযোগে প্রবেশের জন্য নির্ধারিত পথে নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান। প্রাণবন্ত মতবিনিময়, আগত অতিথিবৃন্দের সাথে কুশল বিনিময় এবং রাতের খাবার শেষে প্রধান অতিথি কোন ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ব্যতিরেকে নির্ধারিত গাড়িযোগে তাঁর গন্তব্যে পৌঁছান। প্রধান অতিথি প্রস্থান করার পরে পুলিশ অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে। দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়ে কনস্যুলেট জেনারেল ইতোমধ্যে স্থানীয় পুলিশ, মেয়র এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের স্থানীয় অফিসে পত্র প্রেরণ করেছে।
এখানে আরো উল্লেখ্য যে, প্রধান অতিথির অনুষ্ঠানে আগমন কিংবা প্রস্থানের সময় দুষ্কৃতিকারীদের সঙ্গে উপদেষ্টার কোন ধরনের সাক্ষাৎ বা দূরতম কোন সংযোগ কিংবা সংশ্লেষও ঘটেনি। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা শত চেষ্টা সত্ত্বেও তাদের অসাধু উদ্দেশ্য সাধন করতে পারেনি এবং এহেন কার্যে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নানাবিধ অপতথ্য এবং প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এই ধরণের মিথ্যা তথ্য এবং প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। খবর তথ্যবিবরণী
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.