আলোচনায় ১৯টি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য ——অধ্যাপক আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে দ্বিতীয় পর্যায়ের বৈঠকে মোট ১৯টি বিষয়ে আলোচনা ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এরমধ্যে কতিপয় দলের নোট অব ডিসেন্টসহ কয়েকটি বিষয় গৃহীত হয়। তিনি বলেন, যে সকল বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে তা জুলাই জাতীয় সনদে অন্তর্ভুক্ত হবে।
ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ২৩তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব বিষয় জানান। এসময় কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
নোট অব ডিসেন্টসহ যেসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তা হল, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন, নারী প্রতিনিধিত্ব, বিচার বিভাগ ও সুপ্রীম কোর্টের বিকেন্দ্রীকরণ, প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকা, সরকারি কর্মকমিশন, দুদক, সি এন্ড এজি এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান সংবিধানে সংযোজন করা, উচ্চকক্ষ গঠন, রাষ্ট্রপতির নির্বাচন পদ্ধতি, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে উত্থাপিত সমন্বিত প্রস্তাবের ৮,৯,১১ এবং ১২ ক্রমিকের প্রস্তাবসমূহ এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, নারীদের আসন বৃদ্ধির প্রশ্নে সবচেয়ে বেশি নোট অব ডিসেন্ট এসেছে। তিনি আরো জানান, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বিষয়ে বাংলাদেশ জাসদ, বাসদ-মার্কসবাদী এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি -সিপিবি নোট অব ডিসেন্ট প্রদানসহ সভা বর্জন করে। এছাড়া, গণফোরামের প্রতিনিধি এ ইস্যুতে ভিন্নমত প্রদান করলেও সভা বর্জন করেননি। আলী রীয়াজ জানান, দীর্ঘ ২৩ দিনের আলোচনায় যেসকল বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রথমে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে ৷ এক্ষেত্রে ঐকমত্য কমিশন অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে এবং এরপর যথাসময়ে কমিশন দলগুলোর সাথে আবারও আলোচনায় বসবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।
গত ২ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার শুভ উদ্বোধন করেন। ৩ জুন থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৩০টি দল ও জোটের সাথে মোট ২৩টি সেশনে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.