নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী সত্য উন্মোচন করেছেন বলে বিভিন্ন জায়গায় তাদের বাঁধা দেয়া হচ্ছে—-নাহিদ ইসলাম
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেছেন কক্সবাজারে মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী সত্য উন্মোচন করেছেন বলে বিভিন্ন জায়গায় তাদের বাধা দেয়া হচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেছেন বাধা দিয়ে তারুণ্যের শক্তিকে থামানো যাবে না। চট্টগ্রামের বিপ্লব উদ্যানে এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আয়োজিত বিশাল সমাবেশে এ কথা বলেন।
রাঙ্গামাটি পদযাত্রা শেষ করে সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে পৌঁছান জাতীয় নাগরিক পার্টির জুলাই পদযাত্রা। বহদ্দারহাট মোড় থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সন্ধ্যা সাতটার দিকে পদযাত্রা শুরু হয়। বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে দু’নাম্বর গেইটস্থ বিপ্লব উদ্যানে সমাবেশে যোগ দেন তারা।
সমাবেশে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আরো বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় এই চট্টগ্রাম ছিল ঢাকার পর দ্বিতীয় দূর্গ। শহিদ ওয়াসিম-শান্ত-ফারুকের রক্তের বিনিময়ে এই চট্টগ্রামবাসী ফ্যাসিস্টদের তাড়িয়েছে, নতুন করে কেউ ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে চাইলে তাদেরও প্রতিরোধ করা হবে।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, আমাদের জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী কক্সবাজারে সত্য উন্মোচন করেছেন। সেই সত্য উন্মোচন করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় আমাদের বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। বাঁশখালীতে আমাদের সহযোদ্ধার মাথা ফাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা বলেছিলাম- বাধা দিলে বাঁধবে লড়াই, এ লড়াইয়ে জিততে হবে। বাঁধা দিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির তারুণ্যের শক্তিকে থামানো যাবে না।
নাহিদ ইসলাম বলেন, নানা পরাশক্তি চট্টগ্রামের দিকে চোখ তুলে তাকাচ্ছে। আমরা হুঁশিয়ার করতে চাই, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার অংশ। চট্টগ্রাম বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ভিত্তি। যদি চট্টগ্রামের দিকে কেউ চোখ তুলে তাকায় সারা বাংলাদেশ একসাথে বিদ্রোহ ঘোষণা করবে। আমরা জাতীয় নিরাপত্তা আর সার্বভৌমত্বের জন্য চট্টগ্রামকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল মনে করি। চট্টগ্রামকে অথনৈতিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। গুটিকয়েক পরিবারের হাতে চট্টগ্রামকে আমরা ছেড়ে দেবো না।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে এই চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকেই মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার দুয়ার, আমাদের সার্বভৌমত্বের দুয়ার। ইসলাম সাম্য আর মানবতার বার্তা নিয়ে এই চট্টগ্রাম দিয়ে নদীমাতৃক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল। এজন্য চট্টগ্রামকে বলা হয় ইসলামের প্রবেশদ্বার, ইসলামের দরজা।
সমাবেশে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের মানুষকে দীর্ঘসময় ধরে নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। থানায়, পাসপোর্ট অফিসে, শিক্ষা ভবনে, নির্বাচন অফিসে, সচিবালয়ে গিয়ে হয়রানির শিকার হয় মানুষ। আমরা রাষ্ট্রীয় সেবার ক্ষেত্রে মানুষকে আর হয়রানির মধ্যে রাখতে চাই না। ‘নতুন বাংলাদেশকে নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র চলছে। এই বাংলাদেশে যারা ঘাপটি মেরে থেকে সন্ত্রাস করতে চায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ইমন সৈয়দ, জোবায়রুল হাসান আরিফ, যুগ্ম সদস্য সচিব সাগুপ্তা বুশরা, মীর আরশাদুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আলী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সালমা নিভা, জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক এডভোকেট তারেকুল ইসলামসহ অন্যরা।
এ সময় এনসিপি উপস্থিত ছিলেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সামান্তা শারমিন, ডা. তাসনীম জারা, তাসনুভা আলম সহ প্রমুখ।
কাল সোমবার খাগড়াছড়িতে পদযাত্রার কর্মসূচী রয়েছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.