বিদেশ ফেরত যাত্রীদের আরও সহযোগিতার আশ্বাস বিমানবন্দর পরিচালকের

অসুস্থ যাত্রীদের জন্য এ্যামবুলেন্স সেবা চালু

বিদেশ ফেরত যাত্রীদের সেবা-সহায়তায় আরও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আব্দুল্লাহ আলমগীর।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শাহ আমানত বিমানবন্দরে বিদেশ ফেরত অসুস্থ যাত্রীদের জন্য প্রথমবারের মতো অ্যাম্বুলেন্স সেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আশ্বাস দেন। সিভিল এভিয়েশন কর্তপৃক্ষ ও ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের যৌথ উদ্যোগে এই সেবা চালু করা হয়েছে। এ সময় ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল ইসলাম হাসান ও বিমানবন্দরের বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

বিমানবন্দরে জরুরী প্রয়োজনে এখন থেকে অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা পাবেন আগত অসুস্থ প্রবাসী যাত্রীরা উল্লেখ করে ক্যাপ্টেন শেখ আব্দুল্লাহ আলমগীর বলেন, যেহেতু মধ্যপ্রাচ্য থেকে চট্টগ্রামে অনেক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট আসে তাই অনেক সময় জরুরীভাবে অ্যাম্বুলেন্স সেবার প্রয়োজন হয়। এই বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য যেহেতু ব্র্যাক কাজ করছিলো আমরা তাদেরকে অ্যাম্বুলেন্স সেবার উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানাই। ব্র্যাককে ধন্যবাদ তারা আন্তরিকভাবে এই উদ্যোগ নিয়েছে। এখন থেকে জরুরী প্রয়োজনে আমরা অসুস্থ প্রবাসীদের অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিতে পারবো।

এর আগে সিভিল এভিয়েশন কর্তপৃক্ষ ও ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের উদ্যোগে আয়োজিত সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিমানবন্দরের পরিচালক, গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আব্দুল্লাহ আলমগীর বলেন,  যেহেতু মধ্যপ্রাচ্য থেকে চট্টগ্রামে অনেক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট আসে তাই অনেককেই আমরা দেখি যারা অসহায় হয়ে ফেরত আসে। এই মানুষদের সহায়তা করতেই ব্র্যাক ঢাকার মতো শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাজ করছে। এখানে মানুষকে কাউন্সিলিং, খাবার, যাতায়াত, চিকিৎসাসহ নানা ধরনের জরুরী সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, গত চার বছরে চার হাজারেরও বেশি মানুষকে এই ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মানবিক এই কাজের জন্য ব্র্যাককে ধন্যবাদ। আমরা সবার সঙ্গে মিলে যৌথভাবে এই কাজগুলো আরো বেশি এগিয়ে নিতে চাই যাতে বিমাবন্দরে প্রবাসীরা জরুরী সব সহায়তা পান। আমরা মনে করি সমন্বিতভাবে কাজ করলে আরও বেশি মানুষকে সহায়তা করা যাবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ব্র্যাকের যৌথ অর্থায়নে ইমপ্রুভড সাসটেইনেবল রিইন্ট্রিগ্রেশন অব বাংলাদেশি রিটার্নি মাইগ্রেন্টস (প্রত্যাশা-২) প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে এ সমন্বয় সভার আয়োজন করা হয়। এতে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি, এয়ারলাইন্স সমূহ ও অন্যান্য অংশীজনরা উপস্থিত ছিলেন।

সমন্বয় সভায় ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্মের এসোসিয়েট ডিরেক্টর শরিফুল ইসলাম হাসান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের যে জেলাগুলো থেকে সবচেয়ে বেশি লোক বিদেশে যায় চট্টগ্রাম তার শীর্ষে। তবে অনেক মানুষ যেমন বিদেশে যায় তেমনি শূণ্য হাতে অনেক দেশে ফিরে। তাদের কল্যাণে আমরা প্রথমে ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাজ শুরু করি। গত পাঁচ বছর ধরে পরে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরেও সেই কাজ চলছে। আমরা মনে করি বিমাবন্দরে প্রবাসীদের সেবা দেওয়ার জন্য একটি কাঠামো বা SOP থাকা জরুরী। তাহলে সবাই তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জানতে পারবে। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সবাই মিলেই এই কাজটি করা সম্ভব ।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পুলিশের বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ থেকে যারা বিদেশে কাজ করতে যান তারা অনেক বিষয় সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত নন। তাদের আরো বেশি সচেতন করতে হবে।

অনুষ্ঠানের আরেক বিশেষ অতিথি জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মহেন্দ্র চাকমা বলেন, বাংলাদেশের যে অঞ্চলগুলো থেকে বেশি মানুষ বিদেশে যান তার মধ্যে চট্টগ্রাম অন্যতম। যে জেলাগুলোর প্রবাসী আয় সবচেয়ে বেশি তার মধ্যেও আছে চট্টগ্রাম। তবে এখনো দেখা যায় লোকজন জেনে বুঝে দক্ষ হয়ে বিদেশে যান না। দক্ষ হয়ে তথ্য জেনে বিদেশে গেলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আর বিদেশফেরতদের কল্যাণে আমরা ব্র্যাকসহ সরকারি বেসরকারি সংস্থা সবাই মিলে একসাথে কাজ করছি”।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্যে রাখেন, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পুলিশের বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার কামরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টাস্কফোর্সের কমান্ডার, উইং কমান্ডার রেজাউল হক, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের জিএসও-টু স্কোয়াড্রন লিডার তারিক আজিজ মৃধা, সিভিল এভিয়েশনের সহকারী পরিচালক(ফায়ার) আবু মোহাম্মদ ওমর শরীফ, অত্র বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল, চট্টগ্রামের মহিলা কারিগরী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ আশরিফা তানজীম বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া সমন্বয় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে কার্যক্রম বাস্তবায়নরত সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক, ইমিগ্রেশন পুলিশসহ সরকারি সংস্থাসমূহের কর্মকর্তাবৃন্দ, বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, সাংবাদিক, ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.