অফিস কর্মকর্তার হেনস্তার শিকার যুবতীর আত্মহত্যা
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে অফিস কর্মকর্তাদের হেনস্তার শিকার শুক্লা দে টিকলি (৩৮) নামে এক বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খরণদ্বীপপাল পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। শুক্লা ওই এলাকার সিদুল পালের স্ত্রী। তিনি রুপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ফিল্ড অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার সংসারে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে।
পরিবার ও স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, রুপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে সংস্থাটির কানুনগোপাড়া শাখায় ২০২৩ সালের মে মাস থেকে ফিল্ড অফিসার হিসেবে যোগ দেন শুক্লা। ওই সংস্থা এলাকায় মানুষজনকে ক্ষুদ্র ঋণ দেয়। এসব ঋণ কিস্তি আকারে আদায় করতেন শুক্লা। এরমধ্যে গত ৫ আগস্টের পর এলাকার লোকজন কিস্তি পরিশোধ করছিলো না এবং কিস্তি আদায়ের জন্য গেলে শুক্লাকে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়তে হয়। কিন্তু সংস্থার কানুনগোপাড়া শাখার ম্যানেজার কাঞ্চন দেবনাথ কিস্তি আদায়ে শুক্লাকে চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন। এরপর সংস্থাটি শুক্লার বেতন থেকে অনাদায়ী কিস্তির টাকা কেটে নেওয়ার শর্তে বিষয়টি মীমাংসা করে।
শুক্লার স্বামী সিদুল পালের অভিযোগ, গত নভেম্বর মাসে ১৫ হাজার বেতনের মধ্যে ৭ হাজার টাকা দিলেও ৬ হাজার টাকা কেটে রাখে সংস্থাটি। এছাড়া পটিয়ার ধলঘাট এলাকায় বদলি করে শুক্লাকে। শুধু তাই নয়, অফিসে ডেকে নিয়ে হেনস্তা করে আসছিলো সংস্থার কর্মকর্তারা। এনিয়ে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে শুক্লা। তিনি আরও বলেন, গত শুক্রবার রাতে শুক্লা জানিয়েছে সে নতুন কর্ম এলাকার পথঘাট কিছুই চেনে না। তার মনও সায় দিচ্ছে না নতুন এলাকায় যেতে। পরদিন শনিবার সকালে চাকরিতে যায় নি শুক্লা। বিকেলে ঘরের রান্না ঘরে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার বলেন, খবর পেয়ে গতকাল শনিবার রাতে থানা পুলিশ শুক্লার মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য আজ রবিবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুক্লার মরদেহ পাঠানো হয়েছে। শুক্লার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ অনুযায়ী মামলা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি ।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.