যারা ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করছে তারাও ভারতের দালালি শুরু করেছে
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাই পীর) মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ না করে দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করা নিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে- তা দেশবাসী মেনে নেবে না। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে তা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক।
তিনি বলেন, যারাই শাসক ছিল এবং যারা ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করছে তারাও ভারতের দালালি শুরু করেছে ইতিমধ্যে। বাংলাদেশে ৫৩ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা কেউ জনগণের আশা-আকাঙ্খা পরিপূর্ণ করতে পারেনি। ভারতের তাবেদারি করে তাদের চিন্তাভাবনা বাস্তবায়নের জন্য যারা বিভিন্নভাবে অপেক্ষায় আছে; তাদের সুযোগ দেওয়ার পরিবেশ তৈরি হবে। তা কিন্তু মেনে নেওয়া যায় না।’
আজ শনিবার সকালে নগরের পলোগ্রাউন্ড কনফারেন্স রুমে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘দুঃখ হয়। যখনই খুনি, ফ্যাসিস্ট এবং দেশের টাকা লুটপাট ও পাচারকারীদেরকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে, নির্বাচনে আসার ব্যাপারে আহ্বান করে এবং তাদের সাথে সখ্যতা তৈরি করে। যদি আমাদের দেশকে সুন্দর করতে হয় এবং স্বাধীনভাবে বসবাস করতে চাই, তাহলে এসব চিন্তার পরিবর্তন করতে হবে।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ব্যানারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমরা ন্যায়ের পক্ষে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে নেমে এসেছিলাম, কিন্তু এখন অনেক ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয়ভাবে আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে। আমরা একটি সুন্দর দেশ গড়তে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে বার বার বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করে আসছি।
নগর জামায়াতে ইসলামের আমীর শাহজাহান চৌধুরী চৌধুরী বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম হুমকির সম্মুখীন। ভারত ৫৩ বছর নয় ৮৩ বছর পর্যন্ত ধ্বংসের চক্রান্ত করছে। ভারতের সঙ্গে ১৭ চুক্তি করা হয়েছে। এ ১৭ চুক্তি কি আমরা তা জানি না। চরমোনাইর মরহুম পীর সাহেবরা অতীতে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যুগ যুগ ধরে বক্তব্য দিয়ে এসেছেন। আওয়ামী লীগ আধিপত্যবাদীদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওয়াদা দিয়ে তা বাস্তবায়ন করে না। রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে এ আধিপাত্যবাদ থেকে উদ্ধার হতে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে চট্টগ্রাম নিয়ে যে কয়েক আঙ্গিকে অপচেষ্টা চালানো যায়, সেই চেষ্টাগুলোর নমুনা আমরা দেখেছি। এই অপচেষ্টা দেখানো যেতে পারে সমুদ্রবন্দর কিংবা পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে। পার্বত্য চট্টগ্রামে আবার কয়েকভাবে করা যেতে পারে। একটা ভূমির দিক থেকে আরেকটি বাঙালি এবং পাহাড়ি ভাই-বোনেরা রয়েছে তাদের মধ্যে বিভাজনটি উস্কে দিয়ে।
চট্টগ্রামের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেন, ‘ভারতীয় নীলনকশায় এই বাংলাদেশের নির্বাচনগুলো হয়েছে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের তৌহিদী জনতা হেফাজতের নেতাকর্মীদের শাপলা চত্বরে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ। এর মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত বীজ বপন হয়েছে, অতীতে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি। ভারতীয় এজেন্ডা যেভাবে র এর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে এবং তাদের যে এজেন্টগুলো আছে তাদের মূল উৎপাটন করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নগর সভাপতি মুহাম্মাদ জান্নাতুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন,মাহবুবুর রহমান, হেফাজতে ইসলামের নগর সভাপতি তাজুল ইসলাম, নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফ উদ্দিন মাহদী, বিএনপির নগর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক এস এম সরোয়ার আলম, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিমুদ্দিন চৌধুরী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ, খান তালাত মোহাম্মদ রাফি, খেলাফত মজলিসের নগর সভাপতি খুরশিদ আলম, গণ অধিকার পরিষদ নগর সভাপতি শাহ আলম ও নেজামে ইসলাম পার্টির নগর সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.