নতুন ফিশারিঘাট কর্ণফুলী নদীর জায়গা, আবারও হাইকোর্টের রায়

২৯৯

নতুন ফিশারিঘাট কর্ণফুলী নদীর জায়গা। নদীর জায়গা হিসেবে সংরক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের। বুধবার (২৯ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ খসরুজ্জামান ও বিচারপতি এ কে এম জাহিদ সরওয়ার এর আদালত এই আদেশ দেন।

আদেশের পর হিউম্যান রাইট এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবি প্রেসিডেন্ট সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, যেহেতু আদালত্ উক্ত জায়গাটি নদী হিসাবে সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়েছেন তাই জাতীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিকে উক্ত জায়গা থেকে সরে যেতে হবে।

উল্লেখ্য ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কর্ণফুলী নদীর জায়গা দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করেছে এমন ৪৭ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে উচ্ছেদ নোটিশ প্রদান করেন। ওই নোটিশকে চ্যালেঞ্জ জাতীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনকে নিষ্পত্তি করতে না দিয়ে তার আগেই নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা দায়ের করেন জাতীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ।

আদালত উক্ত রিট মামলায় রুল জারি করে স্থিতিবস্থার আদেশ দেন। মাছ বাজারটি কর্ণফুলীর নদীর জায়গা ভরাট করে তৈরি করা হয়েছে যা হিউম্যান রাইট এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) কর্তৃক জনস্বার্থে দায়েরকৃত ৬৩০৬/২০১০ মামলায় আদালতের নির্দেশে জরিপের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিএস দাগ নাম্বার ৮৬৫১ প্লটের উপর যে আদালত উক্ত স্থিতিবস্থা দিয়েছিল সেই স্থিতিবস্থা নিয়ে এইচআরপিবি একটি আবেদন দাখিল করে আদালতের রায় সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করা হলে, পরবর্তীতে দুই পক্ষের শুনানী করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশণার মৎস্যজীবি সমিতির আবেদন খারিজ করে দেয়।

বিভাগীয় কমিশনার আদালতে প্রদত্ত প্রতিবেদনের এবং অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদেরর শুনানীর প্রেক্ষিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের আদালত জাতীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির দায়েরকৃত রুলটি ২০২৩ সালের মার্চে খারিজ করে দেয়। বিভাগীয় কমিশনার তাদের আপিল খারিজ করে দিলে জাতীয় মৎসজীবি সমিতি হাইকোর্টে আরেকটি রিট পিটিশন করে স্থিতিবস্থার আদেশ অর্জন করেন। যার নম্বর ২৪০২/২০২৩।

চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে দীর্ঘ দুইমাস মামলাটি একাধিকবার বিচারপতি মোহাম্মদ খসরুজ্জামান ও বিচারপতি  এ কে এম জাহিদ সরওয়ার এর আদালতে শুনানী হয়। শুনানীতে এইচআরপিবি প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রিট কারি ও জেলা প্রশাসনের মালিকানা সংক্রান্ত বিষয়ের ব্যাপারে এইচআরপিবি’র কোন বক্তব্য নাই বলে জানান। তবে যে জায়দায় রিট পিটিশনার ফিশারী ঘাট তৈরি করেছেন সেই জায়গাটি কর্ণফুলী নদীর জায়গা এবং এইচআরপিবি জনস্বার্থ মামলায় ইতোপূর্বে হাইকোর্ট ২০১৬ সালে রায় দিয়ে নদীর জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন এবং হাইকোর্টের নির্দেশে জরিপে ৮৬৫১ দাগটি নদী হিসাবে চিহ্নিত। কোন এক সময় নদীর জায়গা ভরাট করে চট্টগ্রাম পোর্ট অথরিটি ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিলের জন্য জাতীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিকে নদীর জায়গাটি লিজ প্রদান করেন। এ সময় এডভোকেট মোরসেদ নদীর জায়গা নদী হিসাবে সংরক্ষণের আদেশ প্রার্থনা করেন। শুনানী শেষে আদালত কর্ণফুলীর নদীর ৮৬৫১ নম্বর দাগ নদীর জায়গা তা নদী হিসেবে সংরক্ষণের আদেশ প্রদান করেন।

শুনানীতে রিটকারীর পক্ষে আইনজীবি ছিলেন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট সারাওয়ার আহমেদ ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা, পোর্ট অথরিটির পক্ষে ছিলেন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সরকারের পক্ষে ছিলেন ডিআইজি বিপুল বাগমির।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.