আমি মনোবল হারাইনি, তাই এভারেস্ট জয় করেছি : বাবর আলী

২১

আমি মনোবল হারাইনি, তাই এভারেস্ট জয় করেছি জানিয়ে চট্টগ্রামের ছেলে বাবর আলী বলেন, গত ১৯ মে পৃথিবীর শীর্ষ পর্বত এভারেস্ট এবং ২১ মে চতুর্থ শীর্ষ পর্বত লোৎসে আরোহণ করে উড়িয়েছি লাল-সবুজের পতাকা। এভারেস্টের শীর্ষে প্রায় দেড় ঘণ্টার মতো অবস্থান করি বলেন বাবর আলী।

বুধবার (২৯ মে ) সকালে হিমালয় জয়ের গল্প ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের এসব কথা জানান তিনি। বাবর আলীর এভারেস্ট জয় করা নিয়ে নগরের ‘আলিয়স ফ্রঁসেজ দ্য চট্টগ্রাম’ মিলনায়তনে সাংবাদ সম্মেলন ও পতাকা-প্রত্যার্পন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

প্রসঙ্গত; পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ ‘এভারেস্ট ও চতুর্থ সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ‘লোৎসে জয় করে ঘরে ফিরেছেন বাবর আলী। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ থেকে প্রথমবার একই অভিযানে হিমালয়ের দুটি আট হাজার মিটার উচ্চতার পর্বত শৃঙ্গ জয়ের কীর্তি। ওই দুঃসাহসী অভিযানের গল্প শোনালেন পতাকা-প্রত্যার্পন অনুষ্ঠানে ।

হালদা পাড়ের ছেলে ডা. বাবর আলী জানান, এভারেস্টের শীর্ষে ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট অবস্থান করেছেন। নেমে আসার সময় এক আহত পর্বতারোহীর জন্য সৃষ্ট মানবজটে প্রায় দেড় ঘণ্টা আটকে ছিলেন। ওই উন্মুক্ত এলাকায় শুরু হয় তুষারঝড়। সৌভাগ্যক্রমে তিনি বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে যান। ক্যাম্প-৪ এবং এর ওপরের এলাকায় পর্বতারোহীরা অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করলেও বাবর চেষ্টা করেছেন অভিযানে যতটা সম্ভব কম কৃত্রিম অক্সিজেন নিতে। কারণ তিনি স্বপ্নে দেখেন, আগামীতে অক্সিজেন সহায়তা ছাড়াই কোনো ৮ হাজারী শৃঙ্গে আরোহণ করবেন।

তবে পর্বত আরোহনের দুই পর্বতে নেপালের গাইড বাইরে তামাং তাঁর সঙ্গী ছিলেন জানিয়ে বাবর আলী বলেন, ‘এভারেস্টের উচ্চতা বেশি হলেও লোৎসে আরোহণ তুলনামূলকভাবে কঠিন।’এভারেস্ট এবং লোৎসে শিখর হতে দেখা নিচের পৃথিবীর দৃশ্য এই জীবদ্দশায় ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। শিখর থেকে অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে নেমে বেস ক্যাম্প থেকে কাঠমান্ডু মাত্র ৩ দিনে ফিরি।

তিনি বলেন, ‘সুস্থ শরীরে ফিরে এসেছি এটা আমাকে আনন্দ দিয়েছে। এ সময় ওজন কমেছে চার কেজি। এভারেস্টে অনেক মরদেহ দেখেছি। কিন্তু আমি মনোবল হারাইনি। অনেকের ইকুইপমেন্ট নতুন, তারা মারা গেছেন বেশিদিন হয়নি। এভারেস্ট সামিট করার ক্ষেত্রে আবহাওয়া বড় ফ্যাক্টর। বাংলাদেশের একজন আবহাওয়াবিদ আমাকে দারুণ সহযোগিতা করেছেন।’

বাবর আলী বলেন, তাঁর এই সফলতার পেছনে নিজের দীর্ঘদিনের পরিশ্রমকে কৃতিত্ব দেন। এছাড়া তিনি কৃতজ্ঞতা জানান নিজের ক্লাব ‘ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স,সকল পৃষ্ঠপোষক সংগঠন এবং ক্রাউড ফান্ডিংয়ে অংশ নেওয়া শুভাকাঙ্খীদের।

এই অভিযানের প্রধান সমন্বয়ক ফরহান জামান অভিযানের পিছনের গল্প সাংবাদিকদের তুলে ধরে বলেন, ‘পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা পেলে এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলে বাংলাদেশের পর্বতারোহীরা আরও অনেক দুর্দান্ত কীর্তি বয়ে আনতে পারবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ভার্টিক্যাল ড্রিমার্সের সভাপতি দেবাশীষ বল, প্রধান উপদেষ্টা শিহাব উদ্দিন এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভিজ্যুয়াল নিটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ.এন. ফয়সাল।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.