বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে কয়েক ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন চট্টগ্রাম
তীব্র দাবদাহে যখন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছে জনজীবন তখনই বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়ে টানা কয়েক ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন পুরো চট্টগ্রাম। এতে একেবারে অসহ্য হয়ে ওঠে জনজীবন।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে এ বিপর্যয়ের কারণে টানা ৪০-৪৫ মিনিট বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে মানুষের ভোগান্তিতে যোগ হয় নতুন মাত্রা।
বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের বিষয় নিশ্চিত করেছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীরা। তবে সন্ধ্যা ৬টার পর বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার মধ্যে বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। তবে রাতে ফের বেশ কিছু জায়গায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে।
পিডিবি চট্টগ্রামের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, চট্টগ্রামে গ্রিড বিপর্যয় ঘটেছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
পিডিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক কুমার চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামের হাটহাজারী-মদুনাঘাটের ১৩২ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে কারেন্ট ট্রান্সফরমারের (সিটি) বিস্ফোরণে গ্রিড বিপর্যয় ঘটেছে। অত্যধিক গরমে এ বিস্ফোরণ হয়েছে, প্রাথমিকভাবে এমনটা ধারণা করছেন তারা।
এদিকে চট্টগ্রামে বেশ কিছুদিন ধরে লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি চলছে। বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে। গরম বাড়তে থাকায় লোডশেডিংও বাড়ছে। বাড়ছে বিদ্যুৎ নিয়ে মানুষের কষ্টও। এ অবস্থায় চট্টগ্রামে গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটলেও প্রথমে সাধারণ মানুষ তা টের পায়নি। তাদের প্রায় সবাই মনে করে, প্রতিদিন যে রকম লোডশেডিং হয়, আজও তেমনটা হচ্ছে। তবে দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষ খোঁজখবর নেওয়া শুরু করে।
পিডিবির প্রকৌশলীরা বলেন, চট্টগ্রামে এমনিতেই চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছিল না। চট্টগ্রামে প্রতিদিন গড়ে ১১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। সেখানে মিলছে ৮০০ থেকে ৮৫০ মেগাওয়াট। এ কারণে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ছে চট্টগ্রাম। এরই মধ্যে গ্রিড বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটল।
এর আগে, গত বছরের ৪ অক্টোবর বেলা ২টা ৫ মিনিটে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় ঘটে। পূর্বাঞ্চলীয় জাতীয় গ্রিডে ওই বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে রাজধানীসহ দেশের একটি বড় অংশ টানা চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকে। ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ ফিরে এলেও কোনো কোনো এলাকায় বিদ্যুৎ আসে ৮ ঘণ্টা পর। এরও আগে ৬ সেপ্টেম্বর একবার গ্রিড বিপর্যয় হয়েছিল। তখন দেড় ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.