চট্টগ্রামকে প্রাচ্যের রাণী হিসেবে সাজাতে চান এটিএম পেয়ারুল

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়

৩২৮

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেছেন, চট্টগ্রামকে প্রাচ্যের রাণী হিসেবে সাজাতে চান, তবে সেক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশের বিশাল আয়তনের জেলার মধ্যে চট্টগ্রাম অন্যতম। এই বিশাল আয়তনের চট্টগ্রামকে শুধুমাত্র তিন-চার কোটি টাকার এডিবি সহায়তা দিয়ে উন্নয়ন কীভাবে সম্ভব? চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাবেক চেয়রম্যান এম এ সালামের কথা উল্লেখ করে এটিএম পেয়ারুল বলেন, ‘এম এ সালাম চট্টগ্রামে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন।’ কিন্তু আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা নিয়ে বছরে এক হাজার কোটি টাকার কাজ করতে চাই। সেই সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ‘গ্রাম হবে শহর’ – এই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর একজন কর্মী হিসেবে সবাইকে সাথে নিয়ে চট্টগ্রামের উন্নয়নে কাজ করতে চাই।

রবিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস।

চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য এটিএম পেয়ারুল ইসলাম চট্টগ্রাম বন্দরের আয় থেকে শতকরা এক ভাগ, ভূমি উন্নয়ন কর থেকে এক ভাগ এবং চট্টগ্রামের ভূমি ট্রান্সফারের আয়ের শতকরা দুই ভাগ প্রদানের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান। তিনি বলেন, যদি জেলা পরিষদের বরাবরে এই বরাদ্ধ পাওয়া যায়, তাহলে সর্বোচ্চ শ্রম, মেধা ও ঐকান্তিকতা দিয়ে কাজ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ উজ্জ্বল করবো।

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, এখনো প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে কিছু সংখ্যক দুর্নীতিবাজ ওঁৎ পেতে আছে। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হলে ওইসব দুর্নীতিবাজদের খুঁজে বের করে উৎখাত করতে হবে। শেখ হাসিনার হাতে যতদিন ক্ষমতা থাকবে ততোদিন দেশ নিরাপদ থাকবে।

এটিএম পেয়ারুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের অনেকগুলো মেগা উন্নয়নপ্রকল্প চলমান রয়েছে। চট্টগ্রামের উন্নয়নের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী সরাসরি তদারকি করেন। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, মিরসরাইতে দেশের সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধু টানেল, আনোয়ারার শিল্পপার্ক, গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণ প্রকল্প ছাড়াও আরো অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্প সম্পন্ন হলে চট্টগ্রামের চেহারা পাল্টে যাবে।

প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নে এবং প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও ফটো সাংবাদিকদের বেস্ট এওয়ার্ড প্রদানসহ সাংবাদিকদের কল্যাণে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণের ঘোষণা দেন।

প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস বলেন, চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বারগুলোতে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি সম্মান জানাতে ছবি দিয়ে স্থায়ী তোরণ নির্মাণের পরামর্শ দেন। প্রেস ক্লাব সভাপতি বলেন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান পারিবারিকভাবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। একইসঙ্গে তার সাথে সদস্য হিসেবে দুইজন বীরমুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। সবার সহযোগিতায় চট্টগ্রামের উন্নয়নে জোরালো ভূমিকা রাখবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি শহীদ উল আলম এবং চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. রুবেল খান, জেলা পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবদুল ওহাব এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম চিশতী।

অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানকে প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা এবং সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। সেই সাথে উপস্থিত জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত সকল সদস্য ও মহিলা সদস্যদেরকে প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

এ সময় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, ক্লাবের সহ-সভাপতি স ম ইব্রাহীম, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটো, সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসিফ সিরাজ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের অর্থ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন হায়দার, ক্রীড়া সম্পাদক দেবাশীষ বড়ুয়া দেবু, গ্রন্থাগার সম্পাদক মিন্টু চৌধুরী, সমাজসেবা ও আপ্যায়ন সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলীউর রহমান, কার্যকরী সদস্য শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার, দেবদুলাল ভৌমিক, মনজুর কাদের মনজু, মহসিন চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য আ ম ম দিলসাদ, আবদুল আলীম, এরফানুল করিম চৌধুরী, আবু আহমেদ চৌধুরী, মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন (মুহুরী), মোহাম্মদ আবু তালেব চৌধুরী, মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, মো. নুরুল মোস্তফা সিকদার, ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম, মোস্তফা রাহিলা চৌধুরী, ফারহানা আফরিন জিনিয়া, রওশন আরা বেগম, দিলোয়ারা ইউসুফ এবং বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার আড়াই শতাধিক সাংবাদিক ও সুধিজন উপস্থিত ছিলেন ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.