সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও সিইউজে’র উদ্বেগ

মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ

৩৬৫

দেশজুড়ে অস্থিতিশীলতা তৈরি করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে গত কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনার গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ। দেশকে আবারো পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কুচক্রী মহলের উস্কানিতে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জল দৃষ্ঠান্তের দেশ। আমাদের দেশে সকল ধর্মের মানুষ, আবহমান কাল থেকে নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব সমূহ নির্বিঘ্নে এবং উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করে আসছেন। এ সম্প্রীতির কারণেই আজ সারাবিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান সমুন্নত হয়েছে। দরিদ্র দেশ থেকে আজ রূপান্তরিত হয়েছে উন্নত দেশে। দেশ ও জাতির অগ্রগতিকে রুখে দাঁড়াতে এবং দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে একটি কুচক্রী মহল অপতৎপরতা শুরু করেছে। সম্প্রতি সনাতনী সম্প্রদায়ের শারদীয় দূর্গোৎসব চলাকালে কুমিল্লায় একটি পূজা মন্ডপে পবিত্র কোরআন আবমাননার ঘটনাটি দেশের বিরুদ্ধে একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে করেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ষড়যন্ত্রকারীরা সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টাসহ সনাতনী সম্প্রদায়ের বাড়ীঘর ও মঠমন্দিরে হামলা এবং ভাংচুর চালাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলোকে উস্কে দিচ্ছে।

বিবৃতিতে প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ সবাইকে সতর্ক থাকার এবং অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানিয়ছেন। একই সাথে নিরীহ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয় এ ব্যাপারেও প্রশাসনকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়।

চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন

দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তা বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেবার আহ্বান জানিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন-সিইউজে। রোববার এক বিবৃতিতে সিইউজে সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম এ আহ্বান জানান। বিবৃতিতে ন্যাক্কারজনক সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান সিইউজে নেতৃবৃন্দ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, কুমিল্লার সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার পর প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় তার রেশ ছড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে হামলার ঘটনা ঘটেছে তার দায় প্রশাসন এড়াতে পারে না।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সারা দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা নতুন নয়। অতীতে সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িতরা পার পেয়ে যাওয়ার কারণে এ ধরণের ঘটনার পূণরাবৃত্তি ঘটছে। একের পর এক সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলুণ্ঠিত করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, কেবল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস দূর করা সম্ভব নয়। দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

এদিকে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার প্রতিবাদে আগামী মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন। সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য উভয় সংগঠনের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.