হাজার টাকায় টিকা! গ্রেপ্তার দুই

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে সিটি করপোরেশনের একজন স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে। ওই স্বাস্থ্যকর্মী নগরীর বিভিন্ন বাসায় গিয়ে প্রতি ডোজ টিকা জনপ্রতি ১ হাজার টাকার বিনিময়ে মানুষকে পুশ করছেন। এ ঘটনায় জড়িত দুই ব্যক্তিকে আটক করে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

আটক দুই ব্যক্তি হলেন, মো. হাসান ও মোবারক আলী।

গত শনিবার (৭ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানার জাকির হোসেন রোডের বাইলেনে মোবারক আলী নামে একজন ব্যাংকারের বাসায় টাকার বিনিময়ে নগরীর উত্তর কাট্টলী সিটি করপোরেশন মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতাল টিকাকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মী বিষু দে মো. হাসান ও সাজ্জাদসহ আরও কয়েকজনকে টিকা দেন।

ওই বাসায় টিকা নেওয়া মো. হাসান শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমডি হাসান নামের আইডি থেকে বাসার ভেতর টিকাগ্রহণের একটি ছবি পোস্ট করেন। স্ট্যাটাসে তিনি টিকার জন্য মোবারক আলীকে ধন্যবাদ জানান।

বাসায় টিকা নেয়ার ছবিসহ এই ফেসবুক স্ট্যাটাসটি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আসে। এরপর পুলিশ গতকাল রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে মো. হাসান ও ব্যাংক কর্মকর্তা মোবারক আলীকে আটক করে।

মোবারক আলী নগরীর বেসরকারী স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা ও মো. হাসান ব্যবসায়ী।

খুলশী থানার ওসি মো. শাহীনুজ্জামান জানান, ঘরে বসে টিকাদানের ঘটনায় চসিকের কাপাসগোলা ইপিআই জোনের মেডিকেল অফিসার ডা. তপন কুমার চক্রবর্তী বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এতে প্রধান আসামি করা হয়, টিকাগ্রহণকারী মো. হাসানকে। অন্য আসামীরা হচ্ছেন টিকাদানে সহায়তাকারী ব্যাংক কর্মকর্তা মোবারক আলী, চসিক স্বাস্থ্যকর্মী বিষু দে, ও আরেক টিকাগ্রহণকারী সাজ্জাদ। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৮০/৪০৬/৪২০/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এদের মধ্যে হাসান ও মোবারক আলী গ্রেপ্তার হলেও এখনো পলাতক রয়েছে বিষু ও সাজ্জাদ।

আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, সিটি করপোরেশন মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতাল টিকাকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মী বিষু দে ওই বাসায় গিয়ে তাদের টিকা পুশ করেছেন। জনপ্রতি ১ হাজার টাকা মূল্যে তারা টিকা গ্রহণ করেছেন।

সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্যকর্মী বিষু দে ও সাজ্জাদকে আটক করতে অভিযান চলছে বলে জানান খুলশী থানার ওসি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিষু দে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশননের স্বাস্থ্য বিভাগে ল্যাব টেকনেশিয়ান হিসেবে কর্মরত আছেন।

তাকে সম্প্রতি নগরীর উত্তর কাট্টলী সিটি করপোরেশন মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতাল টিকাকেন্দ্রে বদলি করা হয়। তার বাসা নগরীর হাজারী গলিতে। তিনি আজ (৯ আগস্ট) সোমবার মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতাল টিকাকেন্দ্রে যাননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশন মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতাল টিকাকেন্দ্রের ইনচার্জ ডা. সুমন তালুকদার রাজনীতি সংবাদকে বলেন, ‘বিশু দে নগরীর খুলশীতে একটি বাসায় গিয়ে টিকা পুশ করার বিষয়টি নিয়ে পুলিশ আমার সাথে কথা বলেছে। কিন্তু তিনি আজকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন।’

এ ঘটনার পর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরীর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।