ময়লা সংগ্রহের জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে এখন থেকে নিন্মোক্ত হারে পরিশোধ করতে হবে টাকা
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। এতে ময়লা সংগ্রহের জন্য এখন থেকে সিটি কর্পোরেশনকে প্রতি ফ্ল্যাটে মাসিক ৫০ থেকে ৭০ টাকা, সেমি পাকা ২৫ থেকে ৪০ টাকা, দোকান / বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ১০০ টাকা ৫০০ টাকা, শিল্প কারখানা ৩০০০ টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা, হোটেল, মোটেল, রেস্তোরা ২০০০ টাকা ৫০০০ টাকা, কনভেনশন হল, কমিউনিটি সেন্টর, মেজবান, ভোজসভা ইত্যাদিতে প্রতি ১০০ জনের জন্য ২০০টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া সরকারি/বেসরকারি বাজার/হাট/মার্কেট/শপিং মলে মাসিক ২,০০০ টাকা থেকে -১০,০০০ টাকা, পুরাতন ভবন সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণের ফলে সৃষ্ট বর্জ্য টন প্রতি ১,০০০ টাকা, ভ্রাম্যমান দোকান হতে উৎপন্ন বর্জ্য (উচ্ছিষ্ট খাদ্য, প্লেইট, কাপ, ক্যান, নারিকেলের খোসা, উদ্ধৃত্ত খাদ্য, ফল, দৈনিক ২০-৫০ টাকা এবং সরবরাহকৃত ড্রাম/ বিন এর জন্য কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে এককালীন ১০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগরীর বর্জ্য সংগ্রহের বিষয়ে মঙ্গলবার জরুরি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করাহয়।এতে চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম নগরীতে বাসাবাড়ি থেকে ডোর-টু-ডোর ময়লা সংগ্রহে দীর্ঘদিন ধরে চলা নৈরাজ্য ও ইচ্ছামত টাকা আদায় রোধে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। চসিকের নতুন নীতিমালার আওতায় বাসা-বাড়িগুলো থেকে ন্যুনতম হারে নির্ধারিত সেবামূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বাইরে কাউকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করতে দেওয়া হবে না। ডোর-টু-ডোর ময়লা সংগ্রহে সেবা নিশ্চিতে ৪১টি ওয়ার্ডের জন্য টেন্ডার আহ্বান করে ১৯২টি শিডিউল বিক্রি হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে অভিজ্ঞ ও সক্ষম প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত হারে ময়লা সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, “কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রথমে সতর্কতা, পরে চুক্তি বাতিল পর্যন্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের উদ্দেশ্য নগরবাসীকে একটা সহনীয়, সুশৃঙ্খল ও নিরবচ্ছিন্ন পরিচ্ছন্নতা সেবা দেওয়া।”
নগরীতে চলমান জলাবদ্ধতার জন্য বাসাবাড়ি থেকে যত্রতত্র ময়লা ফেলা এবং অপরিকল্পিত আবর্জনা ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে তিনি বলেন, “ড্রেন পরিষ্কারের পর আবার ময়লা জমে যায়। অনেকেই জানালা দিয়ে ময়লা ফেলে দেয়। আমরা চাই এই ব্যবস্থাকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে।”
চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আরো বলেন, “বর্তমানে কিছু কোম্পানি মসজিদ-মাদ্রাসা ও বাসাবাড়ী থেকে ২০০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে অথচ সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে তাদের কোনো চুক্তি নেই। আরেকটি প্রতিষ্ঠান হাইকোর্টে রিট করে কিছু এলাকায় কাজ বন্ধ রেখেছে। আমরা আইনি পথে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
তিনি জানান, নতুন সিস্টেমে প্রতিটি কোম্পানিকে শ্রমিকের বেতন, গাড়ির সংখ্যা ও এলাকা অনুযায়ী সক্ষমতা যাচাই করে অনুমোদন দেওয়া হবে। বিশেষ করে যাদের শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্স আছে, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, “ইতিপূর্বে প্রায় ২০০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী ডোর-টু-ডোর কাজের জন্য নিয়োগ পেলেও যারা তিন মাস ধরে কাজে আসছেন না, আমরা ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’ নীতিতে তাদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং নতুন শ্রমিক নিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন চসিক সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, ডা. এস এম সারোয়ার আলম প্রমুখ।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.