মিরসরাইয়ে ৩ ডাকাত গ্রেফতার, মালামাল উদ্ধার
মিরসরাইয়ে দুটি ইউনিয়ন পরিষদে ডাকাতি সহ ৫টি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ল্যাপটপ চুরির ঘটনায় আন্তজেলা ডাকাত দলের ৩সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মিরসরাই থানা পুলিশ। এসময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে একটি দেশিয় তৈরি অগ্নেয়াস্ত্র, বেশ কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়।
রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য সন্দ্বীপ উপজেলার ২নং গাছুয়া ইউনিয়নের গাছুয়া গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে হুমায়ুন কবির (৪০), নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার অম্বল নগর এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে দেলোয়ার হোসেন(৩৮) ও চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানা এলাকার অদূদ ভূঁইয়ার ছেলে আক্তারুজ্জামান রাজু (৩২)।
মিরসরাই থানা সূত্র জানায়, গত ২২ নভেম্বর দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের নৈশ প্রহরীকে ইট দিয়ে আঘাত ও রশিদিয়ে বেঁধে ৫টি ল্যাপটপ, ২টি মোবাইল ও নগদ টাকা নিয়ে যায়। ২৭ নভেম্বর ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের নৈশ প্রহরীকে তার কক্ষের দরজা বাহির থেকে বন্ধ করে দিয়ে পরিষদের ৩টি ল্যাপটপ, মোবাইল ও নগদ টাকা নিয়ে যায়। এর পর ২ ফেব্রুয়ারি মুখোশ পড়া ১০ জনের একটি ডাকাত দল মিঠানালা ইউনিয়নের মলিয়াইশ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ টি ল্যাপটপ ও সুফিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ২টি ল্যাপটপ নিয়ে যায়। এছাড়া মিরসরাই ও জোরারগঞ্জ থানা এলাকায় গত ৩ মাসে বেশ কয়েকটি চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের সামনে মহাসড়কে বিদেশী নাগরিকের গাড়ি ডাকাতি করার সময় দুই বিদেশি নাগরিককে কুপিয়ে জখম করে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এসব ঘটনা প্রকাশিত স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন চাপের মুখে পড়েন। এর পর থানা পুলিশ টহল জোরদারসহ বিভিন্ন ভাবে তৎপরতা বাড়ায়।
থানা পুলিশের এসআই খাইরুল, এসআই মাঈন উদ্দিন ও এএসআই রাম হরিনাথ সহ সঙ্গীয় ফোর্স মহাসড়কে টহল দেয়ার সময় সন্দেহজনক দুই মোটর সাইকেল আরোহীকে ধাওয়া করে একজনকে আটক করে। আটককৃত হুমায়ুন কবিরকে তল্লাশি করে দুটি কার্তুজ সহ একটি দেশিয় আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে। পরবর্তীতে তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদে সাম্প্রতিক চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনাগুলোর সাথে সে ও তার সঙ্গীদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বায়েজিদ মাজার সংলগ্ন বিভো মোবাইল শোরুমের মালিক দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি থেকে ১০টি ল্যাপটপ ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এসময় তার দোকান কর্মচারী আক্তারুজ্জামান রাজুকেও গ্রেফতার করা হয়।
মিরসরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কবির হোসেন জানান, আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সদস্য হুমায়ুন কবিরকে অস্ত্র ও চোরাই মোটরসাইকেলসহ আটকের পর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে চুরি ও ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধার হয়। ওসি জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দেলোয়ার হোসেন নিজেকে সিটিজি ক্রাইম নিউজ ও সিটিজি ক্রাইম টিভির চট্টগ্রাম প্রতিনিধি বলে নিজেকে দাবি করে গ্রেপ্তার এড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু আমাদের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্যদের মাষ্টার মাইন্ড হিসেবে কাজ করেন দেলোয়ার। ডাকাতি ও ছিনতাইকরা মালামাল কমমূল্যে ডাকাত ও ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে ক্রয় করে থাকেন।
মিরসরাই সার্কেল এএসপি ইফতেখার হাসান জানান, এটা মিরসরাই থানার একটা সফল অভিযান। এই অভিযানের মধ্যদিয়ে মিরসরাই ও জোরারগঞ্জ থানা এলাকায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে। এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরির ঘটনায় জড়িত অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.