চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের সম্রাট শিল্পী সনজিত আচার্য মারা গেছেন
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের মুকুটহীন সম্রাট শিল্পী সনজিত আচার্য্য মারা গেছেন। তিনি একাধারে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের শিল্পী, গীতিকার, সুরকার এবং নাটক ও চলচ্চিত্রের কাহিনীকার ছিলেন।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে পরলোকগমন করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সকালে স্ট্রোক করলে এ শিল্পীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন
এ খবরে শোকের ছায়া নেমে আসে চট্টগ্রামের সংগীত ও সংস্কৃতিজনদের মধ্যে। অনেকে ছুটে যান এ সংগীতজ্ঞের পাথরঘাটার বাসায়।
সনজিত আচার্য্যের জুটি ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের আরেক জনপ্রিয় শিল্পী কল্যাণী ঘোষ জানান, তার মৃত্যুতে আঞ্চলিক গানে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ হবার নয়। এটি সংগীতাঙ্গনের বড় ক্ষতি।
শিল্পী সুুুপ্রিয়া মজুমদার লাকী জানান, সনজিত আচার্য্য দাদা আমাকে আঞ্চলিক গান শিখিয়েছেন। তার সঙ্গে অনেক স্মৃতি। কয়েকদিন আগেও কয়েকটি গান গেয়েছি উনার সঙ্গে। সম্পূর্ণ সাপোর্ট দিয়েছেন। দাদার কারণেই আঞ্চলিক গানে আসা।
৭০ দশকের শেষের দিকে সনজিতের আঞ্চলিক নাটক ‘সাম্পানওয়ালা’ নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি করেছিলেন প্রয়াত সংগীত কিংবদন্তি সত্য সাহা, যে ছবি গোটা দেশে আলোড়ন তুলেছিল। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানে শেফালী ঘোষ ও শ্যামসুন্দর বৈষ্ণবের কালজয়ী জুটির পর সনজিত আচার্য-ক্যলাণী ঘোষ জুটিই হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি।
বাঁশখালী মইশখালী/ পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুড়গুড়াই টানে/ আয় তোরা কন্ কন্ যাবি আঁরার সাম্পানে’—চট্টগ্রামের আঞ্চলিক এ গানটি সংগীতপ্রেমী মানুষ বহুবার শুনেছেন। এটি যার মাধ্যমে সবার কাছে পৌঁছেছিল। তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের জনপ্রিয় শিল্পী সনজিত আচার্য।
সনজিত-শেফালী, সনজিত-কল্যাণী এবং সনজিত-কান্তা নন্দীর দ্বৈতকণ্ঠে গাওয়া ‘বাজান গিয়ে দইনর বিলত/ পাটি বিছাই দিয়্যি বইও ঘরত…’, বাঁশ ডুয়ার আড়ালত থাই/ আঁরারে ডাকর কিয়রল্লাই…’, ‘গুরা গুরা হতা হই/ বাগানর আড়ালত বই/ পিরিতির দেবাইল্যা আঁরারে বানাইলা’সহ অনেক গান চিরসবুজ আঞ্চলিক গান হিসাবে পরিচিতি এনে দেয়।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.