চট্টগ্রামে আ.লীগের কর্মসূচি প্রতিহত করবে সমন্বয়করা

নগরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর

নূর হোসনে দিবসে উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি প্রতিহত করতে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও কর্মসূচি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছা্ত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়করা। রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়ে তারা আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে আজ বিকেল ৩টায় নগরের চকবাজার প্যারেড কর্নারে গণজমায়েত কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। চকবাজারে জমায়েত হয়ে জামালখান, আন্দরকিল্লাহ, লালদিঘি হয়ে নিউ মাকের্ট মোড়ে গিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি শেষ হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে আওয়ামী লীগের সমাবেশ ঘিরে ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম নগরেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) রইছ উদ্দিন বলেন, ‘আজ রোববার ঢাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নামার বিষয়টি মাথায় রেখে চট্টগ্রামেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এখানে এরকম কোনো ঘটনা যেন না ঘটে, সেই বিষয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নগরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ও চেকপোস্টে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া পেট্রলিং নিয়মিত কার্যক্রম হিসেবে অব্যাহত থাকবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সমন্বয়ক ইবনে হোসাইন জিয়াদ বলেন, পতিত স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদী শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করলে কিংবা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীর, শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি করার অপচেষ্টা চালালে; আমরা তাদের বিরুদ্ধে মাঠে থেকে শক্তহাতে প্রতিহত করবো। ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগ বিভিন্নভাবে তাদের ষড়যন্ত্র ও তৎপরতা চালাচ্ছে। সেটি মোকাবিলা করে আমরা আমাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে আছি। তিনি বলেন, আশা করি ফ্যাসিবাদী শক্তি যারা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে তাদের সকলকে আটক করবে। যারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী তাদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনবে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে কাজ করবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের আরেক সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ  বলেন, আওয়ামী লীগ বিভিন্নভাবে তাদের ষড়যন্ত্র ও তৎপরতা চালাচ্ছে। সেটি মোকাবিলা করে আমরা আমাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।  এখন যদি কোনো পতিত, ফ্যাসিবাদী শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে কিংবা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীর, শহীদ এবং গাজীদের রক্তের সাথে বেঈমানি করার তৎপরতা চালায়; আমরা তাদের বিরুদ্ধে মাঠে থেকে শক্তহাতে প্রতিহত করবো, ইনশাআল্লাহ।

স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় যুবলীগ কর্মী নূর হোসেনকে হত্যার দিনটিতে রোববার ঢাকার জিপিও এলাকার ‘নূর হোসেন চত্বরে’ শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ; যেটি সরকার পতনের পর দলটির প্রথমবারের মত রাজপথের কর্মসূচি।

দেশে অপশাসন চলছে অভিযোগ করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ নভেম্বর রাজধানীর জিরো পয়েন্টে নেতাকর্মীদের আসার ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দুটি আলাদা পোস্ট করা হয়। পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘১০ নভেম্বর আসুন- নূর হোসেন চত্বরে জিরো পয়েন্ট, গুলিস্তান, ঢাকা। আমাদের প্রতিবাদ দেশের মানুষের অধিকার হরণের বিরুদ্ধে, আমাদের প্রতিবাদ মৌলবাদী শক্তির উত্থানের বিরুদ্ধে, আমাদের প্রতিবাদ সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করার চক্রান্তের বিরুদ্ধে। অপশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে আপনিও অংশ নিন।

এরআগে আওয়ামী লীগকে রাজপথে কর্মসূচি পালন করতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তাঁর ফেসবুক পোস্টে আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিস্ট’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘বিক্ষোভ মিছিল বা জমায়েত কর্মসূচির বিপরীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কঠোর অবস্থানে নেবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.