হাসিনা-কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার অভিযোগের বিচার কার্যক্রম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুরু হয়েছে। বিচার কার্যক্রম শুরুর প্রথম দিনেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে ট্রাইবুনালে হাজিরের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

ট্র‍্যাইব্যুনালের (পুরাতন) মূল ভবনের সংস্কার কাজ চলমান থাকায় ভবন সংলগ্ন (অস্থায়ী) ট্রাইব্যুনালে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়।

অপর অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরায়ানো জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তদন্ত সংস্থার পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মোর্তজা মজুমদার এ পরোয়ানা জারি করেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন আমলের সব হত্যা, গণহত্যা, বিচার বহির্ভূত হত্যা, পিলখানা হত্যার বর্ণনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম। একই সঙ্গে শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চায় ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম।

এরপর ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দেন। আরেক মামলায় ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। এ সময় আদালতে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম ও বি এম সুলতান মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।

হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারকে চেয়ারম্যান করে গত ১৪ অক্টোবর গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। সেই ট্রাইব্যুনালে জামায়াত-বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণা করা হয় এবং তা কার্যকরও হয়।

এর মধ্যেই গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসানের পর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিলে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার করার সিদ্ধান্ত হয়।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.