বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের হঠিয়ে নগরীর নিউমার্কেট এলাকা দখলে নিয়েছে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠণের নেতাকর্মীরা। রোববার (৪ আগস্ট) দুপুর ১২ টার দিকে দফায় দফায় পুলিশ-ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ত্রিমূখী ধাওয়ায় আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের দমাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। অন্যদিকে ঘটনাস্থলে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
পরে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠণের নেতাকর্মীরা দখলে নিয়ে সেখানে গণ জমায়েত ও গণ বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সর্বশেষ যা রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে বলে দলটির নেতৃবৃন্দ সমাবেশস্থল থেকে ঘোষণা দেয়।
পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যৌথ আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে আন্দোলনকারীরা নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অবস্থান নিয়েছে। সংঘাতময় পরিস্থিতিতে নগরীর নিউমার্কেটসহ আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা দিয়ে যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। দোকানপাটও বন্ধ আছে। পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এদিকে নগরের নিউমার্কেট ও আশপাশ এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে নিউমার্কেট ও অন্যান্য এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ ও পাথর লেগে আহত অবস্থায় আনা প্রায় ৭৮ জনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর একজনকে হাসপাতালের আইসিইউতে (ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট) ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের মধ্যে সাত-আটজনের অবস্থা আশংকাজনক বলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের কারো নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নিউমার্কেট ও অন্যান্য এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ ও পাথর লেগে আহত অবস্থায় আনা প্রায় ৭৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, গুরুতর একজনকে আইসিইউতে (ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট) ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের মধ্যে সাত-আটজনের অবস্থা আশংকাজনক।
সরকার পতনের একদফা দাবিতে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা রোববার (৪ আগস্ট) সকাল এগারোটা থেকে চট্টগ্রাম নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন। অন্যদিকে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগ একইস্থানে দুপুর একটা থেকে জমায়েত কর্মসূচি ঘোষণা করে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগসহ সহযোগী সব সংগঠন একাত্মতা প্রকাশ করে একসঙ্গে অবস্থানের ঘোষণা দেয়।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.