চন্দনাইশে মিথ্যা অপবাদে বয়স্ক দম্পতিকে নির্যাতনের অভিযোগ
চট্টগ্রামের চন্দনাইশে মিথ্যা চুরির অপবাদে বয়স্ক দম্পতিকে নির্যাতনের মামলা নিয়ে লুকোচুরির খেলার অভিযোগ উঠেছে চন্দনাইশ থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
গত ৬ জুন সংঘঠিত ঘটনায় পুলিশকে নিয়মিত মামলা রেকর্ড করতে কোর্ট নির্দেশ দিলেও গত পাঁচ দিনেও মামলার ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়নি চন্দনাইশ থানা পুলিশ। উল্টো মামলার বাদীসহ ভিকটিমের পরিবারকে মামলা আপোষ মিমাংসা করতে নানাভাবে হুমকি ধমকিসহ চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে। মামলার অভিযুক্ত আসামীরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রান ভয়ে এলাকায়ও যেতে পারছেনা ভিকটিমের পরিবার।
সোমবার (২৮জুন) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন মামলার বাদী ভিকটিম হামিদা আকতারের ভাই ফারুক ইকবাল টিপু।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে চাচাত ভাইরা মেজবানি অনুষ্ঠানে কাজ করার কথা বলে গত ১৬ জুন তাঁর বোন হামিদা আকতার ও ভগ্নিপতি আবদুল হাকিমকে শহর থেকে চন্দনাইশে চাচাতভাই গোলাম আজাদ শিশুর ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের বিরুদ্ধে চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী রিফা খানের স্বর্নের চেইন চুরির অভিযোগ আনা হয় । ভিকটিম দম্পতি স্বর্ণের চেইন চুরির বিষয় অস্বীকার করলে দুজনকে বাড়ীর দ্বিতীয় তলার আলাদা দুটি কক্ষে নিয়ে পিছমোড়া বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় চাচাত ভাই গোলাম আজাদ শিশু, মিজানুর রহমান, কে এম ইলিয়াছ প্রকাশ ফিরোজ, চাচাত ভাইয়ের স্ত্রী রিফা খান মিলে বৈদ্যুতিক পাইপ, লোহার রড, ও লাটি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগিরা পর দিন ১৭ জুন চন্দনাইশ থানায় মামলা করতে গেলে অভিযুক্তরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ দুদিন ঘুরানোর পরও মামলা নেয়নি।
পরে ভুক্তভোগিরা চট্টগ্রামের জ্যুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিহান সানজিদারের আদালতে সিআর মামলা(১৯৪/২০২১) দায়ের করেন। বিচারক বাদীর আবেদন আমলে নিয়ে তা নিয়মিত মামলা হিসেবে হিসেবে নথিভুক্ত করতে চন্দনাইশ থানার ওসিকে নির্দেশ দিলেও বিগত পাঁচ দিনেও পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করেনি। উল্টো মামলার আসামীদের সাথে আতাঁত করে মামলার বাদী পক্ষকে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি ধমকিসহ চাপ প্রয়োগ করতে অব্যাহত রেখেছে। পুলিশের এমন পক্ষপাত মুলক আচরনে এ ঘটনার ন্যায় বিচার নিয়ে শংকিত ভিকটিমের পরিবার। পাশাপাশি জীবনেরর নিরাপত্তা নিয়েও আশংকায় রয়েছেন তারা।
তিনি বলেন, প্রকৃত পক্ষে স্বর্ণ চুরির কোন ঘটনা না ঘটলেও নিছক পারিবারিক বিরোধের জের ধরেই তাঁর চাচাত ভাইরা এ ঘটনা ঘঠিয়েছে। এলাকায় নিজেদের পৈত্রিক সম্পদ আত্মসাৎ করার মানসেই চুরির অপবাদ দিয়ে পুরো পরিবারকে এলাকা ছাড়া করতেই এমন মিথ্যা বানোয়াট কল্প কাহিনী সাজিয়েছে। ফারুক ইকবাল টিপু বলেন, পুলিশ প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন না করে উল্টো অভিযুক্তদের পক্ষ নিয়ে ভিকটিমের পরিবারকে নানাভাবে নাজেহাল করছে। এ ব্যাপারে সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানান। এসময় ভিকটিম হামিদা আকতার, আবদুল হাকিম, বোন নাজমুন আকতার, ফারজানা আকতারসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে এক দিন একরাত আটকে রেখে বয়স্ক এ দম্পতিকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের পর ভিকটিম হামিদা আকতারের শরীরের পছন ধরেছে। অনেকটা পঙ্গুত্বের দিকে এগুচ্ছে তার শারিরীক অবস্থা। শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতরর জখম নিয়ে বর্তমানে বিছানায় কাতরাচ্ছেন তিনি। একই অবস্থা হামিদার স্বামী অপর ভিকটিম আবদুল হাকিমেরও।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.