মিরসরাইয়ের আলোচিত শিশু ওয়াসিম হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
মিরসরাইয়ের আলোচিত শিশু কাজী মশিউর রহমান ওয়াসিম হত্যা মামলায় কাজী নাহিদ হোসেন পল্লব নামে এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারক। এছাড়া আসামী পল্লবের ভাই কাজী ইকবাল হোসেন বিপ্লবকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
রোববার (৯ জুন) চট্টগ্রামের ১ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল আউয়াল এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী পল্লব চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার মঘাদিয়া ইউনিয়নের ভূঁইয়া তালুক কাজী বাড়ির ফজলুল কবিরের ছেলে। হত্যার শিকার শিশু ওয়াসিম মিরসরাইয়ের মঘাদিয়া ইউনিয়নের ভূঁইয়া তালুক কাজী বাড়ির কাজী মোশাররফ হোসেন বাবলুর ছেলে।
চট্টগ্রাম জেলা আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, যুক্তিতর্ক শেষে মামলার বাদী, ডাক্তার, তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ২১ জনের সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত আসামি কাজী নাহিদ হোসেন পল্লবকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। রায় দেওয়ার সময় আসামিরা জেলহাজতে থাকায় বিচারক তাদেরকে সাজা পরোয়ানামূলে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বলেও জানান তিনি।
নিহত শিশু ওয়াসিমের পিতা কাজী মোশাররফ হোসেন বাবলু রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার আদরের সন্তান কাজী মশিউর রহমান ওয়াসিমকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আদালত হত্যাকারীকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছেন। এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট। তবে রায়টি যেন দ্রুত কার্যকর হয়।’
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ২২ নভেম্বর মিরসরাইয়ের মঘাদিয়া ভূঁইয়া তালুক কাজী বাড়ির কাজী মোশাররফ হোসেন বাবলুর ছেলে ৫ বছরের শিশু ওয়াসিমকে হত্যা করে বাড়ির পূর্ব পাশের ছনখোলায় ফেলে রাখে। পরে আসামির পরিবারের সদস্যরা ছনখোলা থেকে শিশু ওয়াশিমের মরদেহ বস্তাবন্দী করে পাশের ধানক্ষেতে ফেলে দেয়। শিশুটিকে না পেয়ে চাচা কাজী একরামুল হক মিরসরাই থানায় পরের দিন ২৩ নভেম্বর একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। ঘটনার পরদিন শিশুর বস্তাবন্দী মরদেহ ধান ক্ষেতে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ও শিশু ওয়াসিমের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গিয়ে তার মরদেহ শনাক্ত করে। ওই সময় ঘটনাস্থল ছনখোলা থেকে আসামি পল্লবের মোবাইল ও ওয়াসিমের স্যান্ডেল উদ্ধার করে । পরবর্তীতে পুলিশ পল্লবকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় শিশুর চাচা একরামুল হক একই বছরের ২৪ নভেম্বর মিরসরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পল্লব ওয়াসিমকে হত্যার বিষয়টি পুলিশের কাছে স্বীকার করে। ২০১৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আসামি পল্লব, তার ভাই বিপ্লব ও তার মা-বাবার বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের পর মামলার বাদী, ডাক্তার, তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ২১ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষী দেয়। গত ২৯ মে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। যুক্তিতর্ক শেষে আদালত এই রায় দেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.