চট্টগ্রামে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদকে বিদায়ী সংবর্ধনা
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রেজিমেন্ট অব আর্টিলারি এবং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বিদায়ী কর্ণেল কমান্ড্যান্ট হিসেবে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, এসবিসি (বার), বিএসপি, বিজিবিএম, পিবিজিএম, বিজিবিএম, পিএসসি, জি, পিএইচডি কে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে পূর্ণ সামরিক রীতিতে বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়েছে।
বুধবার (১৬জুন) চট্টগ্রাম সেনানিবাসস্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সেন্টারে এই সংবর্ধনা জানানো হয়।
উল্লেখ্য, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ০৪ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে রেজিমেন্ট অব আর্টিলারি এবং ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কর্ণেল কমান্ড্যান্ট হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে বিদায়ী কর্ণেল কমান্ড্যান্ট হিসেবে তাঁর মূল্যবান বক্তব্য রাখেন।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ তাঁর বিদায়ী বক্তব্যের শুরুতেই স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি স্মরণ করেন মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের বহু কাঙ্খিত স্বাধীনতা। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র প্রতি, যার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ একটি আধুনিক এবং চৌকষ বাহিনী হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ কর্নেল কমান্ড্যান্ট হিসেবে তাঁর গৃহিত পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরে বলেন ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ এর আলোকে একটি আধুনিক এবং যুগোপযোগী সেনাবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং রেজিমেন্ট অব আর্টিলারিতে সংযোজন করেছেন অত্যাধুনিক অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং সরঞ্জামাদি।
ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ৩টি নবগঠিত পদাতিক ডিভিশনের অধীনে ৩টি নতুন পদাতিক রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, সেইসাথে আধুনিক অস্ত্র ও সরঞ্জামাদির সাথে সামঞ্জস্য রেখে পদাতিক ব্যাটালিয়নগুলোর প্রস্তাবিত সাংগঠনিক কাঠামো সরকারের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
রেজিমেন্ট অব আর্টিলারি’র আধুনিকায়ন প্রসঙ্গে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ইতিমধ্যেই এই রেজিমেন্টে যুক্ত হয়েছে নবগঠিত ৩টি আর্টিলারি ব্রিগেড এবং ১টি এয়ার ডিফেন্স ব্রিগেডসহ ১৪টি আর্টিলারি ইউনিট। ফায়ার সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রেজিমেন্ট অব আটিলারিকে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত করা হয়েছে । আধুনিকায়নের পাশাপাশি যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ সুবিধা নিশ্চিতকল্পে নির্মাণ ও সংস্কার করা হচ্ছে ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জ এবং ক্রয় করা হচ্ছে অত্যাধুনিক সিমুলেটর। এছাড়াও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনন্য উপহার হিসেবে আর্টিলারি সেন্টার ও স্কুলে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ সুবিধাসম্পন্ন ‘মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্স’ এর নির্মান কাজ চলতি বছরেই সম্পন্ন হবে। বিদায়ী কর্নেল কমান্ড্যান্ট জেনারেল আজিজ আহমেদ এর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ৩টি আর্টিলারি রেজিমেন্ট ইউনিফর্মে শার্টের কলারে লাল পাইপিং পরিধান করছে এবং স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মত ২৬টি আর্টিলারি ইউনিট রেজিমেন্টাল কালার ও ৪টি ইউনিট ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অর্জন করেছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর রেজিমেন্ট অব আর্টিলারি এবং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট তাদের নিজ নিজ উন্নতি ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। কর্ণেল কমান্ড্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তাঁকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করায় সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। পরিশেষে, দেশপ্রেম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশের সেবায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে তিনি রেজিমেন্ট অব আর্টিলারি এবং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সকল সদস্যকে উপদেশ প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে রেজিমেন্ট অব আর্টিলারি এবং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাগণসহ অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। আইএসপিআর-এর
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.