রাষ্ট্রের অর্থে পরিচালিত জাদুঘর জিয়ার নামে থাকতে পারেনা: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী

৩০৪

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ মুরাদ হাসান এমপি বলেছেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন গুপ্তঘাতক, পাকিস্তানের দালাল। রাষ্ট্রীয় অর্থে পরিচালিত কোন জাদুঘর জিয়ার নামে থাকতে পারে না। তাই চট্টগ্রাম পুরাতন সার্কিট হাউজে জিয়ার নামে চলা যাদুঘর সরিয়ে ফেলা হবে। সেভবনকে পুনরায় সার্কিট হাউজে পরিণত করা হবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র হতে তৎকালীন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ভোরে যেযন্ত্র হতে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া স্বাধীনতার ঘোষণা পুনরায় পাঠ করেছিলেন, সে যন্ত্রটি জিয়া স্মৃতি জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। সে যন্ত্রটিকে পুনরায় কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে নিয়ে যথাস্থানে পুনস্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আজ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বেতার ও তথ্য মন্ত্রণালয়াধীন অধিদপ্তরসমূহের কর্মকর্তাদের সাথে মত বিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
সকলকে নিজ দায়িত্ব সততা ও আন্তরিকতার সাথে পালন করার আহ্বান জানিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু পরিবারের মতো আত্মত্যাগ আর কেউ করেনি। বঙ্গবন্ধুর পরিবারই সবচেয়ে বেশি মৃত্যুঝঁকি নিয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের সকলকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে তাই প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কাজের গতির সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। সুস্থ্য ও দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার আহŸান জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের নিকট আবহমান বাংলাকে তুলে ধরতে হবে। গান নাটকসহ শিল্প সাহিত্যের সবকটি শাখায় চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে হবে। তিনি বলেন, বিটিভি ও বেতারের শিল্পী সম্মানী বৃদ্ধি করা হবে।

বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক এস এম মোস্তফা সারোয়ার, চট্টগ্রাম পিআইডির উপপ্রধান তথ্য অফিসার মীর হোসেন আহসানুল কবীর, সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. আজিজুল হক নিউটন, জেলা তথ্য অফিস চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. সাঈদ হাসান, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়–য়াসহ বেতারের অন্যান্য কর্মকর্তগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রতিমন্ত্রী বেতার স্টুডিয়োতে তাঁর সম্মানে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।

বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র ও এফডিসির জায়গা পরিদর্শন এবং নিউজ স্টুডিয়ো উদ্বোধন

প্রতিমন্ত্রী সকালে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ কেন্দ্রের ১০ একর জায়গা হতে সম্প্রতি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন-বিএফডিসিকে ১.৩০ একর জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিমন্ত্রী বরাদ্দকৃত জায়গার সীমানা ও জায়গাটির সরেজমিন অবস্থা অবলোকন করেন।

বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে তিনি পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। তিনি সেখানে একটি নিম গাছের চারা রোপন করেন। এসময় তিনি বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের করোনা প্রতিরোধক বুথ, ফটোগ্যালারি, বার্তা শাখা, প্রশাসন শাখা, অভিযোগ বক্স, নতুন সম্প্রচার টাওয়ার, ড্রামা স্টুডিয়ো পরিদর্শন করেন। তিনি কেন্দ্রের নতুন নিউজ স্টুডিয়ো উদ্বোধন করেন। এসময় নতুন নিউজ স্টুডিয়ো থেকে প্রতিকী নিউজ বুলেটিন প্রচার করা হয়।

পরে কেন্দ্রের কর্মকর্তা কর্মচারি ও সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এফডিসির চট্টগ্রাম কেন্দ্র নির্মিত হলে এখান থেকে বাংলা সংস্কৃতির ধারক ও বাহক সিনেমা নির্মিত হবে। এ কেন্দ্রে নতুন সিনেমার শ্যুটিং হবে। ফলে নতুন নতুন মেধাবি পরিচালক, শিল্পী ও কলাকুশলী তৈরি হবে। বাংলা সংস্কৃতির অঙ্গন সমৃদ্ধ হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে শিখিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে সোনার মানুষ দরকার। তাই সকলকে সোনার মানুষ হয়ে সততা নিয়ে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় কোন খুনি গুপ্তঘাতকের ঠাঁই হবেনা। পাকিস্তানের দালালের ঠাঁই হবেনা। জিয়া ছিল পাকিস্তানের পক্ষের লোক। তাই তার মরনোত্তর বিচার হতে হবে। একই সাথে জিয়া পরিবারেরও বিচার হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সৈনিকেরা জিয়া পরিবারের বিচার অবশ্যই করবে।

এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. ইসমাইল হোসেন খান, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জিএম নিতাই কুমার ভট্টাচার্যসহ তথ্য মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বিকেলে প্রতিমন্ত্রী সাবেক মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত আতাউর রহমান খান কায়সার এর কবর জেয়ারত করেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.