জিয়ার লাশ রাঙ্গুনীয়ায়ও কেউ দেখেনি: ড. হাছান মাহমুদ

২১২

জিয়াউর রহমানের লাশ প্রথমে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়ায় দাফন করা হয়েছিল। কিন্তু সেদিনকার প্রত্যক্তদর্শীদের কেউ তার লাশ দেখেনি এবং তারা একটি বাক্স দেখেছিল বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রাঙ্গুনীয়ার সাংসদ ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সেদিন যারা রাঙ্গুনীয়ার পোমরা ইউনিয়নের যে স্থানে জিয়ার লাশ প্রথম দাফন করা হয়েছিল সেখানে উপস্থিত লোকজনও তার লাশ দেখেননি।

শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকালে জাতীয় শোক দিবস ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সেদিনকার প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে আমি একটু আগে কথা বলেছি। যে ইউনিয়নে জিয়াউর রহমানের প্রথম কবর বলা হয় বর্তমান পোমরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কুতুব চেয়ারম্যানের সাথে। তাকে জিজ্ঞাস করলাম লাশ দেখেছেন, বললেন, দেখিনাই। আরো অনেনে জীবিত আছে, তাদেরকেও জিজ্ঞাস করেছি, তারাও দেখেনি। এ সময় মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়াও দেখে নাই, তারেক জিয়াও দেখে নাই, বিচারপতি সাত্তারও দেখে নাই; তথ্য মন্ত্রীর প্রশ্ন, তাহলে লাশ কারা দেখেছে?’

বিএনপিকে অসত্য এবং মিথ্যাচারের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং অসত্যের ওপর বিএনপির রাজনীতি দাঁড়িয়ে আছে। ইতিহাস সাক্ষী- মিথ্যা আর অসত্যের ওপর রাজনীতি করে বেশিদিন টিকে থাকা যায়না। মিথ্যা ও অসত্য থেকে বেরিয়ে আসলে আজকের অবস্থা থেকে বিএনপি মুক্তি পেতে পারে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির নেতারা ক্রমাগতভাবে বঙ্গবন্ধুর ভুমিকাকে অস্বীকার করে আসছে। তারা একজন খলনায়ককে নায়ক বানানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে খাটো করার অনেক অপচেষ্টা হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাসের পাতা থেকে নির্বাসিত করার অপচেষ্টা হয়েছে। রেডিও টেলিভিশন প্রভৃতি রাষ্ট্রীয় প্রচারযন্ত্র থেকে বঙ্গবন্ধুকে নির্বাসিত করা হয়েছে। স্বাধীনতার খলনায়ক পাকিস্তানিদের দোসর জিয়াউর রহমানকে নায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে ওৎপ্রোতভাবে যুক্ত ছিল।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ইতিহাস থেকে দেখা যায় অনেক বাঙালি নেতা বাঙালির স্বাধীনতার জন্য চেষ্টা করেছেন। তিতুমির, সূর্যসেন বা নেতাজি সুবাস বোসরা এদেশ স্বাধীন করার অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পারেননি। বঙ্গবন্ধুই একমাত্র ঘুমন্ত বাঙালি জাতিকে ধীরে ধীরে স্বাধীনতার মুলমন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন। ত্রিশ লক্ষ মানুষ রক্ত দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছে বঙ্গবন্ধুর আহবানে। সেজন্যই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হতে পেরেছেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ এমনভাবে কৌশলে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন, পাকিস্তানিরা তাকে বিদ্রোহী বলে আখ্যায়িত ও অভিযোগ গঠন করতে পারেনি। সেসময়ের পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে তার উল্লেখ আছে।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের রাজনীতির পাশাপাশি লেখাপড়া সঠিকভাবে চালিয়ে যাবার আহবান জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা লেখাপড়াকে গুরুত্ব দেন। রাজনীতি করতে গিয়ে পড়াশোনার ক্ষতি করা যাবেনা। রাজনীতি হচ্ছে দেশ এবং সমাজ পরিবর্তনের জন্য একটি ব্রত, সেটি মাথায় রাখতে হবে। যেকোন ত্যাগ স্বীকারে সবসময় প্রস্তুত থাকবে।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তানভীর হোসেন চৌধুরী তপুর সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন উত্তরজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, সাধারন সম্পাদক শেখ মো. আতাউর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা স্বজন কুমার তালুকদার, দেবাশীষ পালিত, জসিম উদ্দিন শাহ, শাহজাহান সিকদার, নজরুল ইসলাম তালুকদার, ইদ্রিছ আজগর, গিয়াস উদ্দিন, ইফতেখার হোসেন বাবুল, আকতার হোসেন খাঁন, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.