চট্টগ্রামে ৮ দলের সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান: ‘আমরা ৮ দলের নয়, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, “আমরা ৮ দলের বিজয় চাই না, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই। আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের বাংলাদেশ।” শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘির ময়দানে ৮ দলের উদ্যোগে আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লালদীঘির ময়দান নেতাকর্মী ও সাধারণ নাগরিকদের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। দুপুর পৌনে ২টা থেকে সমাবেশের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক।

‘ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও দেশ পুরোপুরি মুক্ত হয়নি’

ডা. শফিকুর রহমান অভিযোগ করেন, পূর্ববর্তী সরকার দেশের সম্পদ লুট করেছে এবং রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। তিনি বলেন,
“ফ্যাসিবাদ বিদায় নিয়েছে, কিন্তু দেশ এখনও সম্পূর্ণ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ৫ আগস্টের বিপ্লবের পর একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার—সবই চলছে।”

তিনি আরও জানান, ৮ দলের ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের আন্দোলন চলবে। “প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্টের মতো আন্দোলন হবে,” হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

মামুনুল হক: ‘বাংলাদেশ বনেদিদের হাতে থাকবে না’

সভাপতির বক্তব্যে খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন,
“বাংলাদেশ গরিব–দুঃখী মানুষের রক্তে গড়া দেশ। কোনো বনেদি বা আধিপত্যবাদী গোষ্ঠীর শাসনে এটি আর চলবে না। ইসলামী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনতার বিজয় নিশ্চিত করবে।”

তিনি দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোটের পক্ষে জনগণকে উৎসাহিত করেন এবং নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা তৈরি হলে তার দায় সরকারের ওপর বর্তাবে বলে মন্তব্য করেন।

মুফতি ফয়জুল করীম: ‘ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে বৈষম্য থাকবে না’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করীম বলেন,
“ব্রিটিশরা চলে গেলেও ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি, ১৯৭১ সালের পরও বৈষম্য কমেনি। তাই জনগণ মুক্তি পায়নি। ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে বৈষম্য দূর হবে।”

অন্যান্য নেতাদের বক্তব্য

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন:
ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁনসহ ৮ দলের শীর্ষ নেতারা।

তারা বলেন, জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে ইসলামপন্থী দলগুলো রাষ্ট্র পরিচালনায় ভূমিকা রাখবে এবং চট্টগ্রামকে ইসলামের ঘাঁটি হিসেবে শক্তিশালী করা হবে। নেতারা প্রশাসনে সুশাসন, দুর্নীতি দমন এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবি জানান।

উপস্থিতি ও কর্মসূচি

সমাবেশে ৮ দলের হাজারো নেতাকর্মী অংশ নেন। বক্তৃতার সময় ৮ দলের পাঁচদফা দাবি সম্বলিত স্লোগান ময়দানে বারবার ধ্বনিত হয়।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.