চট্টগ্রাম বন্দরে আগস্টে পরপর দুটি মাইলফলক অর্জন : এ ধারা অব্যাহত থাকলে ১বছরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন-এ উন্নীত করা সম্ভব —নৌবাহিনীর চিফ অপারেটিং অফিসার ক্যাপ্টেন মোঃ জাহিদ হোসেন
বাংলাদেশ নৌবাহিনী গত ৭ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি’ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এ বিগত আগস্ট মাসে পরপর দুটি মাইলফলক অর্জন করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ নৌবাহিনী। সে সাথে জাহাজের টার্ন এরাউন্ড টাইম ৬১ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৫৭ ঘণ্টায় নামিয়ে আনা, বহির্নোঙরে জাহাজের ওয়েটিং টাইম হ্রাস এবং অপেক্ষমাণ জাহাজ এখন শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আজ চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি ইয়ার্ডে নৌবাহিনীর এক সংবাদ সম্মেলনে চিফ অপারেটিং অফিসার ক্যাপ্টেন মোঃ জাহিদ হোসেন এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত আগস্ট মাসে এনসিটিতে ৭৫হাজার ৫৮৭ টি কন্টেইনার বক্স হ্যান্ডলিং করেছে, যার মোট পরিমাণ ১ লাখ ২২হাজার ৫১৭ টিইইউএস। এটি চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে মাস ভিত্তিক কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে সর্বোচ্চ রেকর্ড।
সে সাথে ২৮ আগস্ট একদিনে ৫ হাজার১৯ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করে নতুন রেকর্ড সৃস্টি করে, এর মাত্র তিন দিন পর, ৩১ আগস্ট আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে একদিনে ৫হাজার ৬১ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করে বন্দরের আরেকটি ইতিহাসের মাইলফলক অর্জন করে। আগে দৈনিক গড়ে ২৫০০ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিংহলেও নৌ বাহিনী দায়িত্ব নেয়ার পর প্রতিদিন ৩৬০০ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করেছে। এতে গড়ে দৈনিক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি পেয়েছে ১১৩৫ টিইইউএস।
জাহাজের টার্ন এরাউন্ড টাইম ৬১ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে বর্তমানে ৫৭ ঘণ্টায় নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ে সক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে বহিনোঙরে জাহাজের ওয়েটিং টাইম উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। অপেক্ষমাণ জাহাজ এখন শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি ক্রেন প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে এবং কন্টেইনার ডুয়েল টাইম কমিয়ে আনা ও ইয়ার্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। বন্দরের বিদ্যমান ইকুইপমেন্টসমূহের সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিতে দ্রুত সমন্বয় সাধন, পৃথকভাবে এক্সপোর্ট এবং এম্পটি ব্লকের ধারণার প্রবর্তন ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
নৌবাহিনী আশা করেন, চট্টগ্রাম বন্দরের বার্ষিক কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা ৩.৩ মিলিয়ন হতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে ৩.৫ মিলিয়ন-এ উন্নীত হবে ইনশা আল্লাহ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এক বছরপর কনটেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা ৩.৭ মিলিয়ন-এ উন্নীত করা সম্ভব হবে।
সিডিডিএল-এর এই সফলতা দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দরের সার্বিক সক্ষমতা ও অপারেশনাল গতিশীলতা বৃদ্ধির সাথে সাথে আমদানি-রপ্তানি খাতেও গতির সঞ্চার হয়ে বলে জানান। সেই সাথে দেশের ব্যবসাবান্ধব অবকাঠামো এবং পরিচালন দক্ষতার একটি শক্তিশালী বার্তা, বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের কাছেও পৌঁছে দিবে। বাংলাদেশের অর্থনীতির সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এই সকল প্রকারের সহযোগিতা ও অবিরাম শুভকামনার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ,কাস্টমস, শিপিং এজেন্ট, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার, মেইন লাইন অপারেটর, সিএনএফ এজেন্ট, ট্রাফিক বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সকল প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। এর ধারা বাহিকতা অব্যাহত রাখতে নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা বন্দরের সকল স্টেক হোল্ডারদের সহায়তা কামনা করেন। ব্রিফিংকালে নৌবাহিনীর উর্দ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.