বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণেল জিয়াউদ্দিন বীর উত্তম আর নেই, কাল বুধবার কাজীর দেউরি শতদল কাব চত্বরে এবং বৃস্পতিবার বাদ জোহর জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে জানাজা
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ,একাত্তরের রনাংগনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)”র সাবেক সফল চেয়ারম্যান, প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশন্যাল স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল কর্ণেল (অবঃ) জিয়াউদ্দিন (বীর উত্তম) ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্না-লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাহি রাজিউন)। তিনি মঙ্গলবার বিকেলে ৪টায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন।
কাল বুধবার বাদ এশা কাজীর দেউরি শতদল কাব চত্বরে এবং বৃস্পতিবার বাদ জোহর জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে পরিবারে পক্ষে জানানো হয়েছে।
রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদে প্রেসক্লাবের সামনে প্লেকার্ড নিয়ে একক প্রতিবাদ তাঁর বিবেকবোধ ও সৎ-সাহসের পরিচায়ক। এধরনের নিখাদ নির্লোভ দেশপ্রেমিক আদর্শ চরিত্রবান মানুষের বর্তমানে বড়ই সংকট চলছে।
কর্ণেল (অব:) জিয়াউদ্দিন (বীর উত্তম)”র মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন ব্যাক্তি ও সংগঠন । সে সাথে শোক সন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, বীর উত্তম, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন বীর সেনানায়ক এবং পরবর্তীতে একজন বামপন্থী বিপ্লবী হিসেবে পরিচিত। তিনি ১৯৩৯ সালের ২২ নভেম্বর কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের পহরচান্দা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অ্যাবোটাবাদ সেনানিবাস থেকে মেজর আবু তাহের, মেজর মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর এবং ক্যাপ্টেন বজলুল গণি পাটোয়ারীর সঙ্গে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তিনি ১ম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ১ নম্বর সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। সিলেটের এমসি কলেজ, ধলই, কানাইঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে তিনি সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ‘বীর উত্তম’ খেতাবে ভূষিত করে।
স্বাধীনতার পর তিনি ৪৬তম ব্রিগেডের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ঢাকা সেনানিবাসে একটি অস্থায়ী ব্যাটল স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭২ সালে তিনি সরকার ও ভারতের সঙ্গে চুক্তির সমালোচনা করে একটি প্রবন্ধ লেখেন, যার ফলে তাকে সামরিক চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তিনি সিরাজ সিকদারের নেতৃত্বাধীন পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টিতে যোগ দেন এবং ১৬ বছর পর সাধারণ ক্ষমার আওতায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। এর পর তিনি ইসলামের সুমহান শিক্ষা ও আদর্শে জীবন অতিবাহিত করেন।
চট্টগ্রাম শহরের আশকার দিঘীর পাড়স্থ বাসায় সাধারণ জীবন কাটান, শেষ বয়সে কিছু শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.