চিকিৎসকদের কমিশন নেওয়া অনৈতিক ও অবৈধ : ডা. এ কে আজাদ খান
ওষুধ কোম্পানি থেকে চিকিৎসকদের কমিশন নেওয়া অনৈতিক ও অবৈধ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের প্রধান জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান। আজ শনিবার (২১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের বীর উত্তম শাহআলম মিলনায়তনে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সঙ্গে অংশীজনদের মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেছেন, এটা অনৈতিক, ইললিগাল। এটা তো থাকাই উচিত না। এটা কমিশনের রিপোর্টে উল্লেখ থাকবে। আমি নিজে একজন ডাক্তার। ডাক্তারদের কমিশন নেওয়া খালি ইমমোরাল না, ইললিগালও। কাজেই আমাদের রিপোর্টে ওরকম পিনপয়েন্ট না থাকলেও বিষয়টি থাকবে।’
সভায় অধিকাংশ অংশীজন বিশেষ করে চিকিৎসকেরা স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করে রোগীদের বিদেশযাত্রা ঠেকাতে স্বাস্থ্যশিক্ষার ওপর জোর দেওয়ার তাগিদ দেন। এক্ষেত্রে তারা স্বাস্থ্যখাতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করেন। সভায় মানহীন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং প্রান্তিক পর্যায়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের নানা সংকটের বিষয় আলোচনায় উঠে আসে। চিকিৎসা খাতে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করার বিষয়টি উল্লেখ করেন চিকিৎসকেরা।
কমিশন প্রধান ডা. এ কে আজাদ খান জানান, আপাতত কমিশন অংশীজনদের মতামত শুনছে। পরবর্তী সময়ে সেবাগ্রহীতাদের মতামত নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেবেন। তিনি বলেন, ‘একটি জনমুখী সার্বজনীন স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য সভায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী প্রস্তাবনা এসেছে। এসব প্রস্তাব কমিশনের কাজের জন্য সহায়ক হবে।
স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন সদস্য ডা. আজহারুল ইসলাম খান বলেন, রোগীদের বিদেশমুখীতা কমাতে জনবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে জনগণের কাছ থেকে পরীক্ষা ও ওষুধের খরচ যাতে বেশি রাখতে না পারে সেটি নিয়ে কাজ করছে কমিশন।
সভায় স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য ডা. আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন, অধ্যাপক ডা. সায়েরা আক্তার, অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, উমাইর আফিফ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অংশীজনদের মধ্যে চিকিৎসক, মেডিকেল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কয়েকজন শিক্ষার্থী, স্বাস্থ্যখাতের সরকারি কর্মকর্তা, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, বেসরকারি মেডিকেলের কর্মী, মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা অংশ নেন। তবে রোগী ও সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে কেউই ছিলেন না। ফলে সভায় শুধুমাত্র চিকিৎসক-কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অভাব-অভিযোগ এবং তাদের নিয়ে নানাসময়ে ওঠা অভিযোগের জবাব নিয়ে আলোচনা হয়। সেবাগ্রহীতা ছাড়াই কমিশনের সভা নিয়ে তাদের কেউ কেউ অবশ্য প্রশ্ন তোলেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.