চট্টগ্রাম কলেজে হামলার ঘটনায় ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচারের প্রতিবাদ

৩৯

চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে কয়েকজন নেতা-কর্মীর ওপর দুই দফায় হামলার অভিযোগ করেছে ছাত্রদল। হামলায় পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে প্রথমে ও পরে বেলা ৩টার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলার শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছে কলেজ শাখা ছাত্রদল।

ওই ঘটনার জন্য শিবিরকে দায়ী করা হলেও শিবির বলছে, ঘটনার সঙ্গে শিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এমনকি চট্টগ্রাম কলেজে তাদের কোন সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই। এ ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচারের জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে কিছু সংবাদ মাধ্যমের মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিশেষ করে অনলাইন পোর্টাল ‘চট্টগ্রাম প্রতিদিন’, বাংলাদেশ প্রতিদিন এবং প্রথম আলোসহ বেশকিছু সংবাদ মাধ্যম ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি ফখরুল ইসলামকে জড়িয়ে যে ঘটনা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে তার সাথে শিবিরের মহানগর সভাপতির কোনো ধরনেরই সংশ্লিষ্টতা নেই। ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় একটি প্রোগ্রামে অংশ নিতে মহানগর সভাপতি কয়েকদিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন। তিনি তাঁর ফেসবুকে লাইভেও বিষয়টি সারাদেশের মানুষকে পরিস্কার করেছেন। এরপরও কিছু সংবাদমাধ্যম যেভাবে ছাত্রশিবির ও মহানগর উত্তর শাখার সভাপতির নাম ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত করেছে, তা অত্যন্ত মানহানিকর।

এই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি ফখরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি তানজীর হোসাইন জুয়েল।

এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘটিত ঘটনার সঙ্গে ইসলামী ছাত্রশিবির কোনোভাবেই জড়িত না। কিন্তু সংঘাতমূলক ঘটনার পর প্রতিবারই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নাম জড়ানোর একটি প্রক্রিয়া চলছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং ভিত্তিহীন।

ছাত্রশিবিরের মতো সুশৃঙ্খল সংগঠনের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এমন মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত প্রতিবেদন করা হয়েছে বলে আমরা মনে করছি। আর এমন মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা চালিয়ে ছাত্রশিবিরের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক।

নেতৃবৃন্দ, ভবিষ্যতে আরো যাচাই-বাছাই করে সংবাদ প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমকে আহ্বান জানান এবং গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত সংবাদের সংশোধনী প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট পত্রিকা ও অনলাইন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফ হোসাইন কলেজে গেলে কয়েকজন মিলে তাঁর ওপর হামলা চালায়। এ সময় তাঁকে মারধর করে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া হয়। আশরাফ কলেজ অধ্যক্ষকে বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানান। অধ্যক্ষ তাঁকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন।

বেলা ৩টার দিকে আশরাফসহ ছাত্রদলের পাঁচ-ছয়জন নেতা-কর্মী লিখিত অভিযোগ অধ্যক্ষকে দিয়ে ফেরার পথে তাঁদের ওপর আবার হামলা চালানো হয়। হামলায় আহত হন, আশরাফ হোসাইন, সাইফুল করিম আরিয়ান, শরীফুল ইসলাম আবীর, নাঈম ভূঁইয়া ও শোয়াইবুল ইসলাম। তাঁদের মধ্যে আশরাফ ছাড়া বাকি সবাই চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পুলিশের চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে বলে জেনেছি। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সেখানে গেছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ছাত্রদলের দাবি, শিবির তাদের ওপর হামলা করেছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.