আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনী ও তালেবানের সংঘর্ষের সময় এক ভারতীয় সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। নিহত ওই সাংবাদিকের নাম দানিশ সিদ্দিকী। তিনি বার্তাসংস্থা রয়টার্সের ফটো সাংবাদিক। বৃহস্পতিবার রাতে তালেবানের হামলায় তিনি নিহত হন।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে শুক্রবার (১৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, আফগানিস্তানের কান্দাহারের স্পিন বোলদাক শহরে দেশটির সরকারি বাহিনী ও তালেবান যোদ্ধাদের সংঘর্ষের সময় দানিশ সিদ্দিকী নিহত হন। পেশাগত দায়িত্বপালনের জন্য তিনি সেখানে অবস্থান করছিলেন। নিহত দানিশ সিদ্দিকী পুলিৎজার পুরস্কারজয়ী ফটো সাংবাদিক।
এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, তালেবানের হামলায় সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকীর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভারতে নিযুক্ত আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত ফরিদ মামুনদজাই। তিনি (দানিশ সিদ্দিকী) আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন বলে জানান তিনি।
শুক্রবার এক টুইট বার্তায় ফরিদ মামুনদজাই বলেন, ‘গত রাতে কান্দাহারে আমার বন্ধু দানিশ সিদ্দিকীর নিহত হওয়ার খবরে আমি খুবই শোকাহত। পুলিৎজার পুরস্কার জয়ী ভারতীয় এই সাংবাদিক আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। দুই সপ্তাহ আগে কাবুলে যাওয়ার সময় তার সাথে আমার দেখা হয়েছিল। তার পরিবার এবং রয়টার্সের প্রতি সমবেদনা।’
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রধান চিত্র সাংবাদিক ছিলেন দানিশ। টুইটারে এক সাংবাদিকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতেই তালেবানের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন দানিশ। তিনি আফগান সেনা শিবিরেই ছিলেন। তাকে আহত অবস্থায় শিবিরে রেখে আফগান সেনারা তালোবান বিরোধী অভিযানে শুরু করে। কিন্তু শুক্রবার সকালে ফের তালেবানের হামলার মুখে পড়ে আফগান সেনারা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দানিশের।
নিহত দানিশের বাড়ি ভারতের মুম্বাইয়ে। ৪০ বছর বয়সী এই সাংবাদিক জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার ছাত্র ছিলেন। টেলিভিশন সাংবাদিক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও পরে চিত্র সাংবাদিকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
২০১০ সালে রয়টার্সে শিক্ষানবীশ চিত্র সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন। তার ৬ বছরের মধ্যেই ইরাকের মসুলের যুদ্ধের ছবি তুলতে যান দানিশ। ২০১৫ সালে নেপালের ভূমিকম্পের ছবিও তোলেন। ২০১৯-২০ সালে হংকং আন্দোলন, ২০২০ সালে দিল্লির দাঙ্গার ছবিও তোলেন এই চিত্র সাংবাদিক।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গা সংকটের সময় টেকনাফে এসেছিলেন দানিস সিদ্দিকী। সে সময় মায়ানমার থেকে বিতারিত রোহিঙ্গারা যখন নাফ নদী পার হয়ে দলে দলে টেকনাফের শহপরীর দ্বীপে আসছিলেন তার তখনকার তোলা কিছু ছবি তার জীবনে এনে দেয় সাফল্য। রোহিঙ্গাদের সেই সময়ের তোলা কয়েকটির ছবির জন্য পুলিৎজার পান।