বিএনপির অসাংবিধানিক কর্মপন্থা প্রতিহত করতে হবে: ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ

নগর আওয়ামী লীগের শোক দিবসের আলোচনা সভা

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এম.পি বলেছেন, বৈশ্বিক বাস্তবতার আলোকে জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে যে দৃশ্যমান সংকট চলমান রয়েছে তা সাময়িক হলেও বিএনপি পরিকল্পিতভাবে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে বৈধ ও সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সব ধরণের নৈতিক শক্তি ও সাহসকে ধারণ করে ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তুলে বিএনপির অশুভ অসাংবিধানিক কর্মপন্থা প্রতিহত করতে হবে।

রোববার (১৪ আগস্ট) বিকেলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নগরীর কাজীর দেউরীস্থ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন, সহ-সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, এম. জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জালাল উদ্দীন ইকবাল, দিদারুল আলম চৌধুরী, জোবাইরা নার্গিস খান, ডাঃ ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, এড. কামাল উদ্দীন আহমদ, ইঞ্জিনিয়ার বিজয় কৃষাণ চৌধুরী, আব্দুল লতিফ টিপু, রোটারিয়ান মোঃ ইলিয়াছ, মোঃ জাবেদ, হাজী বেলাল আহমদ, মোর্শেদ আক্তার চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এম.পি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম নাহলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না, বাংলাদেশের জন্ম না হলে বাঙালি চিরদিন শৃঙ্খলিত হয়ে থাকতো। অথচ ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের নীল নকশা অনুযায়ী ’৭১এর পরাজিত শক্তির প্রত্যক্ষ ইন্ধনে কিছু বিপথগামী সেনা সদস্য বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করে বিশ্ববাসীর কাছে বাঙালিকে কলঙ্কিত করেছে। সেদিনের এই মর্মান্তিক ঘটনাটির পর অনেক বিশ্ব নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেছিলেন, যে জাতিকে যিনি স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন তাকে নির্মমভাবে হত্যার মধ্যদিয়ে প্রমাণিত হয়েছে এই জাতিটি বেঈমান হিসেবে পরিচিতি পায়। আমাদের জন্য এর চেয়ে বড় কোনো লজ্জা আর হতে পারে না। আমরা জানি, বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানীরা হত্যা করতে সাহস পায়নি, বঙ্গবন্ধুও বিশ্বাস করতেন কোনো বাঙালি তাকে হত্যা করতে পারে না। অথচ নিয়তির নির্মম পরিহাস বঙ্গবন্ধুকে বাঙালির হাতেই নিষ্ঠুরভাবে প্রাণ দিতে হলো। তিনি প্রশ্ন করেন, সেদিন জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পেছনে তার প্রত্যক্ষ ইন্ধন ছিল কি না? অবশ্যই ছিল। কারণ তিনি একজন অধীনস্থ সামরিক কর্মকর্তা হয়েও ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে বঙ্গবন্ধুকে উৎখাত করার কথা জানালেও তিনি তাদের কোর্ট মার্শাল ল করাননি। বরংঞ্চ এও বলেছেন যে, তোমরা যদি সাকসেসফুল হতে পারো তাহলে আছি। এর অর্থটি কি দাঁড়ায়? জিয়াউর রহমান প্রস্তুত ছিলেন তিনি একটা কিছু ঘটিয়ে ফেলবেন এবং পরিস্থিতির মওকা পেয়ে তিনি এই দেশকে আবার পাকিস্তান বানাবেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়া ঠিক তা-ই করেছেন এবং তার উত্তসূরী স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া একই কাজটি আরো ভালোভাবে করতে চেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন।

তিনি বর্তমান পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট উপস্থাপন করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে যেখান থেকে টেনে তুলে আজ উচ্চতার আসনে বসিয়েছেন তা অনেকের সহ্য হচ্ছে না। এরা জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা ধরণের মিধ্যাচার করছে। আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শের উত্তরসূরী এবং এই চট্টগ্রামের মাটিতে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার স্বপ্নজাল বুনেছেন এম.এ আজিজ ও জহুর আহমদ চৌধুরীকে ঘিরে। এই চট্টগ্রাম থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার বার্তাটি বিশ্ববাসীর কাছে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। চট্টগ্রামের মাটিতেই বঙ্গবন্ধু অনেক স্বপ্ন বুনন করেছিলেন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে চট্টগ্রামবাসীকেই সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।