চট্টগ্রাম চেম্বারের আয়োজনে শুরু হয়েছে ৩০তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। নগরের রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড মাঠে বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজন করেছে।
৪ লাখ বর্গফুটের এ মেলায় ২০টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ৫৬টি প্রিমিয়ার স্টল, ১৪টি গোল্ড স্টল, ৪৮টি মেগা স্টল, ১১টি ফুড স্টল, ৩টি আলাদা জোন নিয়ে ৪০০টি স্টলে তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা।
এবারের মেলায় ভারত, থাইল্যান্ড ও ইরান বিভিন্ন স্টলের মাধ্যমে তাদের পণ্য প্রদর্শন করবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এমএ লতিফ এবং এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
বক্তব্য দেন মেলা কমিটির উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, দেশীয় পণ্যকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচিত করার লক্ষ্যে এ মেলার আয়োজন। এ মেলায় ২০ লাখের বেশি দর্শক, ক্রেতা ও অতিথির সমাগম হয়ে থাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, টানেলসহ অনেক মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল হলে আগামী ৫০ বছর আমদানি-রফতানি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। আমাদের ব্লু ইকোনমির সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।
তিনি বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রামে বাণিজ্য মেলার জন্য স্থায়ী জায়গা বরাদ্দের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে ১০ একর জায়গা বরাদ্দ দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি। এ জায়গা বরাদ্দ পেলে স্থায়ী ভেন্যু করতে পারবো।
মেলা কমিটির চেয়ারম্যান একেএম আকতার হোসেন বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র, সন্ধানী, চট্টগ্রাম বধির ক্রীড়া ও সমাজ কল্যাণ সংস্থা এবং রাউজান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিকে (আরআইটি) বিনামূল্যে একটি করে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মেলায় আগত দর্শক ক্রেতার সুবিধার্থে সার্বক্ষণিকভাবে একটি ইনফরমেশন বুথ বা তথ্য কেন্দ্র চালু থাকবে।
মেলায় অংশগ্রহণকারী ও আগত দর্শনার্থীদের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মেলা প্রাঙ্গনে চৌকশ পুলিশ বাহিনী ৩ (তিন) শিফটে বিভক্ত হয়ে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যগণও বিশেষভাবে নিরাপত্তা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন। এছাড়াও মেলা প্রাঙ্গণে সুদক্ষ প্রাইভেট সিকিউরিটির সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে মেলার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে।
অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা মোকাবেলায় তাৎক্ষণিক অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে গাড়িসহ ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম মেলা চলাকালীন সময়ে সর্বদা মেলা প্রাঙ্গণে অবস্থান করবে।
মেলার মাঠের উত্তর-পশ্চিম কর্নারে পুরুষদের জন্য বিশাল জায়গাজুড়ে মসজিদ ও দক্ষিণ-পূর্ব কর্নারে নারীদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নতুন সংযোজন হিসেবে শিশুদের বিনোদনের জন্য মাঠের দক্ষিণ পার্শ্বে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। মেলা শুধু বাণিজ্যের স্থান নয় এটা নগর জীবনে একে অন্যের সাথে মেলবন্ধনের একটি সুযোগ। তাই বসার সুবিধাসহ ফোয়ারা সমৃদ্ধ ১২,৩২০ বর্গফুট জুড়ে একটি ওপেন প্লাজা রাখা হয়েছে। মেলা চলাকালীন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার মেলা পরিদর্শন করবেন। এতে করে সেসব দেশে আমাদের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ সৃষ্টি হবে।