আবুল খায়ের গ্রুপের স্টিল মিলের কাঁচামাল বোঝাই ট্রাকে এক নিরাপত্তাকর্মীকে খুনের ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধ ও বৃহস্পতিবার পাহাড়তলী, খুলশী, হালিশহর ও বন্দর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জহির হোসেন।
গ্রেফতাররা হলেন, মো. রকি (২২) মো. রাসেল আখন (২৭), মো. আব্দুল্লাহ (২০), মো. রানা পারভেজ (১৯), মো. ইব্রাহিম শান্ত (২০), মো. আব্দুর রায়হান (১৯), মোহাম্মদ আলী রমজান (২০), মো. আব্দুল জলিল (৬২), মো. মজিবুর রহমান রিপন (৩০) ও মো. সাজ্জাদ (৩০)।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৬ সেপ্টেম্বর আবুল খায়ের স্টিল মিলের মালিকানাধীন ৩৫ টন কাঁচা লোহা (পিগ আয়রন) ভর্তি একটি ট্রাক সদরঘাট থানার জুট র্যালি ঘাট থেকে রাত সাড়ে তিনটার দিকে সীতাকুণ্ডের উদ্দেশে রওনা করে।
ট্রাকটি রাত সাড়ে চারটার দিকে আকবর শাহ থানার চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কের গ্লাসকো গেটের সামনে পৌঁছালে সাত-আটজন লোক গাড়ির চালককে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ও পাথর (কাঁচা লোহার টুকরা) নিক্ষেপ করে ট্রাকটি থামাতে বাধ্য করেন। পরে ট্রাকে থাকা ৩০০ কেজি কাঁচা লোহা লুট করেন তারা।
সকাল আটটার দিকে শীতলপুর আবুল খায়ের স্টিল মিলে ট্রাকে থাকা মালামাল আনলোডিং করা হয়। এ সময় মালামালের স্কর্টের (পাহারা) দায়িত্বে থাকা কর্মচারী আবুল হাসেম নীরবের (১৯) মরদেহ পাওয়া যায়। পরে ৭ সেপ্টেম্বর এ ঘটনায় আকবর শাহ থানায় পেনাল কোড ৩৯৬ ধারায় একটি মামলা করা হয়।
ওসি জহির বলেন, মামলা দায়েরের পর পুলিশ ঘটনাস্থলের আশ পাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। পরে ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ সেপ্টেম্বর দুপুর পর্যন্ত পাহাড়তলী, খুলশী, হালিশহর, বন্দর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত ১০ জনকে গ্রেফতার করে।
আসামিরা জানান তারা, আবুল হাসেম নীরবকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। তাদের গ্রেফতারের পর ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত মেক্সিমা অটো টেম্পু, দুটি ফোল্ডিং চাকু, লুটের ৩০০ কেজি কাঁজা লোহা জব্দ করা হয় বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
ওসি জহির জানান, আসামিরা পেশাদার চোর ও ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। চক্রের সদস্যরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচলরত বিভিন্ন লোহা ও লোহা তৈরির কাঁচামালবাহী ট্রাককে অনুসরণ করতেন। পরে নির্জন স্থানে গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মেক্সিমায় (এক ধরনের গাড়ি) করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ও পাথর নিক্ষেপ করে ট্রাক থামিয়ে মালামাল লুট করতেন। পরে সেসব চোরাই ও লুটকৃত মালামাল বিক্রি করতেন চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন ভাঙারির দোকানে।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। ঘটনায় গ্রেফতার মো. রকি ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।